মৃতের বিবাহ! এমনই এক অদ্ভুত প্রথা প্রচলিত কর্ণাটকে

আয়োজনে কোনো খামতি নেই। সানাই বাজছে, চতুর্দিক ঝলমল করছে রঙিন আলোয়। উপহার নিয়ে হাজির হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। খাওয়া-দাওয়ারও এলাহি আয়োজন। কিন্তু যাঁদের বিবাহ, তাঁদেরই দেখা নেই কোথাও। বরং, তাঁদের ছবির সামনেই উপহার রেখে আশীর্বাদ করছেন অতিথিরা। ব্যাপার কী? কোথায় নিজেদের বিবাহানুষ্ঠান ছেড়ে কোথায় গেলেন নবদম্পতি?

না, এই ইহজগতে আর নেই তাঁরা। পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ৩০ বছর আগেই। অবাক লাগাই স্বাভাবিক। তবে কর্ণাটকে (Karnataka) এমনটা হয়ে থাকে হামেশাই। কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলায় প্রয়াতদের বিবাহদান এক ঐতিহ্যবাহী প্রথা। যা পরিচিত ‘প্রেত কল্যাণম’ (Pret Kalyanam) বা ‘মৃতের বিয়ে’ নামে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, মৃত্যুর পরেও রয়েছে এক অফুরন্ত জীবন। সেই জীবনকে পূর্ণতা দেওয়ার দায়িত্বও মৃতের পরিবারেরই। তাই বিবাহের আয়োজন। সম্প্রতি এই ঐতিহ্য মেনেই সাত পাকে বাঁধা পড়লেন শোভা ও চন্দপ্পা। 

ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই যারা প্রাণ হারিয়েছে কিংবা শৈশবেই থেমে গেছে জীবনের চাকা, মূলত তাদের জন্যই আয়োজন করা হয় প্রেত কল্যাণমের। মৃত ব্যক্তিদের বয়স ২৫-এর গণ্ডি পেরলেই শুরু হয়ে যায় আয়োজন। ধুম পড়ে যায় পাত্র-পাত্রী দেখার। সে-সব মিটলে বর-কনের আদলে গড়া হয় তাঁদের কাল্পনিক মূর্তি। সেইসঙ্গে বিবাহের মণ্ডপে রাখা হয় মৃত সন্তানদের বাঁধানো ছবিও।

তবে মৃতের বিবাহ বলেও, এই বিবাহের নিয়মকানুন কিংবা আচার আমাদের পরিচিত বিবাহানুষ্ঠানের মতোই। বাগদান, কন্যাদান, মাল্যদান, মঙ্গলসূত্রের আচার, অগ্নিসাক্ষী করে সাত পাকে ঘোরা— সবটাই হয় প্রচলিত রীতি মেনে। মৃতের বিবাহ বলে আনন্দ-উৎসবে ভাটা পড়ে না এতটুকু। 

সম্প্রতি অ্যানি অরুণ নামের এক দক্ষিণী ইউটিউবারের হাত ধরে দেশজুড়ে চর্চায় উঠে এসেছে এই অদ্ভুত বিবাহপ্রথা। কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড়ে শোভা ও চন্দপ্পার বিবাহ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তিনি। ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন এই অদ্ভুত রীতিকে। যা এখন রীতিমতো ভাইরাল ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায়…

Powered by Froala Editor