কৃষকরাই দেশের সব। অথচ কৃষিকাজকে বহুমানুষই ছোট চোখে দেখেন। আমাদের বেঁচে থাকার কারণ হিসেবে বেশিরভাগটাই কৃষকদের প্রাপ্য।
তাই, পড়াশোনার পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হোক চাষবাসকেও। স্নাতক হতে হলে চাষ জানতে হবে – এমনটাই দাবি চিনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের।
কৃষকদের সঙ্গে অনেকটাই সময় মাঠে কাটাতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। নতুন ঘটনা নয়, এমন নিয়ম চলছে প্রায় দশ বছর ধরে। বেজিংয়ের চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি ২০০৯ সাল থেকে এই নিয়ম চালু করে। এর ফলে চিনের শস্য উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি হাতেনাতে কৃষিকাজ শেখানোর জন্যই এই নিয়ম চালু করেছে। তিন বছরের কোর্সের দু’বছরই তাদের কৃষকদের সঙ্গে মাঠে চাষ করতে হয়।
২০০৯ সালে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম এই প্রজেক্ট চালু করেন হেবেই প্রদেশের বাইঝাইয়ে। তখন থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই প্রজেক্টের ফলে হেক্টর প্রতি গম উৎপাদন ৫,৬৭০ কিলোগ্রাম থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭,২৭০ কিলোগ্রাম। আর ভুট্টা উৎপাদন ৬,৪৩৫ কিলোগ্রাম থেকে বেড়ে হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৯,১০৫ কিলোগ্রাম।
শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ে নয়, হাতে কলমে এই শিক্ষার ফলে যে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় তাতে কৃষকরাও অবাক হয়ে যান। প্রথম যখন পড়ুয়ারা কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে নামে, কৃষকরা মনে করেছিলেন এতে চাষের ক্ষতি হবে। কিন্তু তা হয়নি।
পড়ুয়ারা প্রথমে জমির মাটি পরীক্ষা করে মাটির প্রকৃতি অনুযায়ী, কোন ধরনের বীজ বপন করা উচিত তা নিজেদের পড়াশোনার মাধ্যমে কৃষকদের জানায়। সেইমতো কোন জমিতে কী শস্য চাষ হবে তার একটা তালিকা বানানো হয়। এর আগে কৃষকরা নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চাষাবাদ করতেন ঠিকই, কিন্তু তাতে অনেক ত্রুটি থাকত। কোন সময়ে কোন বীজ কোন জমিতে দেওয়া উচিত তা সম্বন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন কৃষকরা। এভাবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছেন তাঁরা। হাতেনাতে চাষাবাদ শেখার ফলে অভিজ্ঞতাও বৃদ্ধি পেয়েছে পড়ুয়াদের।