গত বছর মে মাসে আসামের তিনসুকিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাসের কুয়ায় বিস্ফোরণের ফলে বিধ্বংসী আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা অঞ্চলে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সমগ্র বাস্তুতন্ত্রে। আবার সংবাদ মাধ্যমের প্রথম পাতায় জায়গা করে নিল তিনসুকিয়া। প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময় পরে আসামে দেখা মিলল বিরল ম্যান্ডারিন হাঁসের। অকুস্থল তিনসুকিয়ার সেই অভিশপ্ত মাগুরী-মোটাপুং বিল। বিরল এই হাঁসের ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত পরিবেশবিদ এবং পাখি বিশেষজ্ঞরা।
১৯০২ সালে আসামে শেষবারের জন্য পরিযায়ন করেছিল এই পাখিটি। তার প্রায় ১২০ বছর পর এই হাঁসের দেখা মেলে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকে কার্যত আসামের এই জলাভূমির তারকা হয়ে উঠেছে ম্যান্ডারিন হাঁস। বিরল এই দৃশ্য দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন পক্ষী-পর্যবেক্ষকরা। আসাম ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে, ২০১৩ সালে মণিপুরের লোকটাক হ্রদে দেখা মিলেছিল এই পাখির।
১৭৫৮ সালে সুইডিস প্রাণীবিদ কার্ল লিনিয়াস প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন ম্যান্ডারিন ডাক-কে। রঙিন পালকের বিশেষত্বের জন্য অনেক দূর থেকে সহজেই চিহ্নিত করা যায় এই হাঁস। তবে সারা বিশ্বে ম্যান্ডারিন যে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিদের মধ্যে রয়েছে, তেমনটা নয়। তবে ‘বিরল’ এই কারণেই বলা, কেন না ভারতে তার উপস্থিতি সচরাচর চোখে পড়ে না। রাশিয়া, কোরিয়া, জাপান এবং চিনের বেশ কিছু অংশে পরিযায়ন দেখা যায় এই প্রজাতির।
তবে শুধু ম্যান্ডারিনই নয়, সম্প্রতি আসামে অবলুপ্তপ্রায় হোয়াইট উইংড উড ডাকও চিহ্নিত করেছেন ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার গবেষকরা। আর এই ঘটনাই অনেকটা যেন স্বস্তি দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের। ধীরে ধীরে ক্ষতস্থান সারিয়ে তুলছে প্রকৃতি। সেপ্টেম্বরের জায়গায় এ বছর পরিযায়ী পাখিরা আসামে ফিরেছিল নভেম্বর মাসে। তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বন্যার কারণেই তিনসুকিয়ার জলাভূমিতে জমে থাকা খনিজ তেল ধুয়ে যাওয়ায়, নতুন করে বেঁচে উঠছে বাস্তুতন্ত্র। ন্যাশনাল সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী আসামের এই জীববৈচিত্রপূর্ণ অঞ্চলে রয়েছে কমপক্ষে ৩০৪টি পাখির প্রজাতি। যা অত্যন্ত ইতিবাচক দিক বলেই অভিমত জীববিজ্ঞানীদের…
Powered by Froala Editor