বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। পদে পদে সংক্রমণের ভয়। কিন্তু তার মধ্যেই কাজ করে যেতে হচ্ছে। নইলে অসহায় দুঃস্থ মানুষদের চিকিৎসা করবেন কে? কিন্তু তাঁদের এই আত্মত্যাগের কতটুকু মর্যাদা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে? অনেকেই অবশ্য নিজের মতো করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। মিশিগানের এই মানুষটিও তাঁদের একজন। সপ্তাহখানেক আগে একদিন রাস্তায় দেখা গেল তাঁকে। হাতে ধরা একটি প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, 'ফ্রি গ্যাস ফর নার্সেস'।
অ্যালেন মার্শাল নামের এই ভদ্রলোকের সামান্যই সঞ্চয় ছিল। নিজের শখের কিছু জিনিস কিনতে জমিয়েছিলেন ৯০০ ডলার। এর মধ্যেই এসে গেল করোনা মহামারী। চোখের সামনে দেখছেন, রাতদিন এক করে পরিশ্রম করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। মার্শালের স্ত্রীও আপৎকালীন পরিষেবার কর্মী। তাই তাঁদের অবস্থা তিনি বেশ কাছ থেকেই দেখেছেন। আর তারপরেই ঠিক করলেন, নিজের সাধ্যমতো পাশে দাঁড়াবেন সমস্ত নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের। ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াই যে প্রতিটা মানুষের লড়াই। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। সামান্য সঞ্চয়ের টাকায় গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার কিনে ফেললেন। তারপর জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের গাড়িতে বিনামূল্যে গ্যাস ভরে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। এক সপ্তাহে ৫০টির বেশি গাড়িতে গ্যাস ভরেছেন তিনি।
মার্শালের এই উদ্যোগ রীতিমতো প্রচার পেয়েছে। মার্শাল নিজেও চান, স্বাস্থ্যকর্মীরা জানুক যে তিনি তাঁদের ভালোবেসে এই কাজ করছেন। মাত্র ৯০০ ডলারে আর কতটুকুই বা করতে পারেন তিনি? তবে ভালোবাসার উষ্ণতাটুকুই যে ভীষণ দামি। এই বিপদের মুহূর্তে মানুষের পাশে থাকা নিরলস মানুষদের ধন্যবাদ জানিয়েই তাঁর এই সামান্য উদ্যোগ।
অনেকেই এই উদ্যোগের প্রশংসাও করেছেন। সম্প্রতি অ্যালানা নামের জনৈক মহিলা তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই উদ্যোগের জন্য ২০০ ডলার অর্থ সাহায্য করেছেন। ভবিষ্যতে হয়তো আরো অনেকে এগিয়ে আসবেন এভাবেই। করোনার দিনগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মধ্যেই যেন আমরা আবার বুঝতে পারছি, এই পৃথিবীতে একা বাঁচার ক্ষমতাই নেই আমাদের। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইটাও তাই হাতে হাত রেখেই লড়তে হবে।