মৃত্যুর আগে নিজের সম্পত্তি উইল করে যান অনেকেই। কেউ কেউ তাঁর সম্পত্তি দান করেন কোনো সরকারি বা দাতব্য সংস্থার কাছে। তবে বিহারের মোহাম্মদ আখতার যা করলেন, তা সত্যিই অভিনব। তিনি তাঁর ৬.২৫ একর জমি দান করে গেলেন দুই পোষ্য হাতিকে। ৫০ বছরের আখতারের আয়ু হয়তো আর বেশি নেই। কিন্তু তাঁর হাতিরা তো অনেক দিন বাঁচবে। তাঁর অবর্তমানে যেন তাদের কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আখতার।
ছোটোবেলা থেকেই আখতার দেখে আসছেন, তাঁর পরিবারে হাতি পোষার একটা রেওয়াজ আছে। সেই থেকে এই বিরাট জনোয়ারটির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব। এখন তাঁর কাছে মতি এবং রানি নামের যে হাতি দুটি থাকে, তাদেরকেও তিনি সেই শিশু অবস্থা থেকেই পালন করে আসছেন। এরা দুজন যেন তাঁরই সন্তান, মনে করেন আখতার। ওই মতিই তো কয়েক বছর আগে এক আততায়ীর হাত থেকে তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছিল। আজও সেকথা স্পষ্ট মনে আছে তাঁর। শুধু আক্ষেপ একটাই, তাঁর পরিবারের কেউ কেউ শুধু টাকার লোভে এই প্রাণী দুটিকে মেরে ফেলতে চায়।
সম্প্রতি কেরালায় এক অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। এর পরপরই উঠে আসে দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রাণীর উপর অত্যাচারের নিদর্শন। কিন্তু তার মধ্যেও আখতারের মতো কিছু মানুষ মানবিকতার প্রকৃত উদাহরণ রেখে চলেছেন। আর তাঁর উদ্যোগ তো কেবল পোষ্য প্রাণীদের নিরাপত্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে হাতি এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য নিজের উদ্যোগে তৈরি করেছেন একটি সংস্থা। অনেকেই সেই উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আগামীতেও এগিয়ে আসবেন অনেকে। মানুষ নামের প্রাণীটার এই দ্বৈত চরিত্রই তো একসঙ্গে বাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মৃত হাতিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে শোকস্তব্ধ পরিবার, ‘মানবিক’ দৃশ্য ভাইরাল