একসঙ্গে ৯টি সন্তানপ্রসব করে বিশ্বরেকর্ড মালির মহিলার

একজন দুজন নয়, একসঙ্গে ৯ জন সন্তানের জন্ম দিলেন মালি দেশের মহিলা। মালি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ঘোষণা ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। গিনেস বুকের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এই ঘটনা। বিস্মিত চিকিৎসকরাও। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, প্রসবের পর মা এবং ৯ জন সন্তান প্রত্যেকেই সুস্থ আছেন বলে জানানো হয়েছে।

বুধবার মরোক্কোর হাসপাতালে ৯ জন সন্তান প্রসব করেছেন হালিমা সিজে নামের এই মহিলা। ৭ মাস আগে ২৫ বছরের এই তরুণী গর্ভধারণ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি হতে থাকে। চিকিৎসকরা আল্ট্রাসোনোগ্রাফ রিপোর্ট দেখেই অবাক। রিপোর্টে স্পষ্ট দেখা যায়, একসঙ্গে ৭টি ভ্রূণ গর্ভে ধারণ করেছেন হালিমা সিজে। সরকারি হাসপাতাল থেকে খবর পৌঁছে যায় মালি সরকারের কাছে। আর তার পর থেকেই সিজের সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করে সরকার।

তবে সমস্ত রকম নিরাপত্তা নেওয়া সত্ত্বেও সিজের প্রসব ঘটানোর মতো পরিকাঠামো ছিল না পশ্চিম আফ্রিকার দরিদ্র দেশটিতে। তাই মার্চ মাসেই তাঁকে মরোক্কোর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসার যাবতীয় খরচ অবশ্য মালি সরকারই গ্রহণ করে। সিজের স্বাস্থ্য নিয়ে মরোক্কোর চিকিৎসকরাও চিন্তিত ছিলেন। ক্রমশ জরায়ুর উপর চাপ বাড়তে থাকে। তাই গর্ভস্থ ভ্রূণ সম্পূর্ণ পরিণতি পাওয়ার আগেই সিজার পদ্ধতিতে প্রসবের সিদ্ধান্ত নিলেন চিকিৎসকরা। বুধবার সেই অপারেশন কার্যকর হয়। আর আবারও অবাক হলেন সবাই। ইউএসজি রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল ৭টি ভ্রূণ। অথচ বাস্তবে ৯ জন সন্তান প্রসব করলেন সিজে। ৫ জন মেয়ে এবং ৪ জন ছেলে।

মরোক্কো হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে প্রতিটা শিশুর ওজন মোটামুটি ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কিলোগ্রামের মতো। সাধারণ শিশুদের চেয়ে ওজন বেশ কম। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাত্র ৩০ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা পেরোতেই তাদের প্রসব ঘটানো হয়েছে। তাই ওজন কম হওয়া স্বাভাবিক। যদিও তাদের সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় আনতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। যদিও তাতে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সিজে এবং তাঁর সন্তানদের সুস্থ থাকার কথা মালিতে বসেই শুনেছেন সিজের স্বামী কাদের আর্বি। প্রত্যেকে সুস্থ আছে, এটুকুই তাঁর কাছে সবচেয়ে খুশির খবর।

ইতিমধ্যে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের কাছেও সিজের প্রসবের খবর পৌঁছে গিয়েছে। ২০০৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার নাদিয়া সুলেমন ৮ জন সন্তানের জন্ম দিয়ে রেকর্ড তৈরি করেন। তবে সেই রেকর্ডকে ঘিরে যথেষ্ট বিতর্কও জন্ম নেয়। জানা যায়, তিনি রেকর্ড তৈরির উদ্দেশ্যে ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট করিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে অবশ্য পুরো প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যদিও গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের মতে প্রতিটা শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনে প্রবেশ না করা পর্যন্ত রেকর্ড বুকে নাম তোলা সম্ভব নয়। আপাতত সিজে ও তাঁর সন্তানদের উপর দৃষ্টি রাখবে কর্তৃপক্ষ।

Powered by Froala Editor