লকডাউনে বন্ধ সমস্ত স্কুল-কলেজ। এই অবস্থায় কীভাবে চলবে পঠনপাঠন? বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বদলাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থাও। আর ঠিক এই পরিস্থিতিতেই মালদার ইংরেজবাজার থানার এক ছোট্ট স্কুলে বসে এক নতুন মডেল তৈরি করে অবাক করে দিয়েছেন শ্রী হরিস্বামী দাস। আর সেই মডেল দেখে খুশি কেন্দ্রীয় কমিটিও। আগামীমাসেই সেই সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে খোদ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার পেতে চলেছেন তিনি।
ইংরেজবাজার থানার শোভানগর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস। গতবছর মার্চ মাস থেকে লকডাউন ঘোষণা হতেই হরিস্বামীবাবু ভেবেছিলেন, একদিনের জন্যও যেন পড়ুয়াদের পঠনপাঠন বিঘ্নিত না হয়। আর তাই সহশিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন প্রতিটা পড়ুয়ার বাড়িতে। তাদের বাড়ির পরিবেশ দেখে বোঝার চেষ্টা করেছেন, ঠিক কীভাবে সবাইকে একসঙ্গে জুড়ে নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। হরিস্বামীবাবু বুঝেছিলেন, পড়ুয়াদের অনেকের বাড়িতেই পর্যাপ্ত বই নেই। এদিকে স্কুলের লাইব্রেরি বন্ধ। তাই প্রতিটা বইয়ের কিউআর কোডের ব্যবস্থা করেছেন, যাতে যে কোনো পড়ুয়া তার প্রয়োজনীয় বইটি পেয়ে যায়। এছাড়া অনলাইনে পঠনপাঠনের পাশাপাশি চলেছে নানা ধরণের ওয়েবিনার। এবং মাঝে মাঝে পড়ুয়াদের নিয়েই নেমে পড়েছেন সামাজিক কাজেও।
হরিস্বামী দাসের এই মডেল প্রশংসা পেয়েছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের থেকেও। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষকদিবসে দেশের ৪৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পুরস্কৃত করবেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে বাংলার প্রতিনিধি একমাত্র হরিস্বামী দাস। অবশ্য শিক্ষক হিসাবে পুরস্কার পাওয়া তাঁর এই প্রথম নয়। ২০১৫ সালে শোভানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পায় তাঁর স্কুল। এরপর ২০১৮ সালে শিশুমিত্র এবং ২০১৯ সালে যামিনী রায় পুরস্কার। পাশাপাশি জল সংরক্ষণ ও বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী বণ্টনের জন্য দুবার জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছে শোভানগর উচ্চ বিদ্যালয়। তবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের মতো পুরস্কার পাওয়ায় সত্যিই আপ্লুত হরিস্বামী। এই পুরস্কারপ্রাপ্তির খবর তাঁর কাজের নেশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষক থেকে বিশ্বব্যাঙ্কের শিক্ষা-পরামর্শদাতা, স্বপ্নের উড়ান মহারাষ্ট্রের রঞ্জিতের