ভারতে বেসরকারি স্কুলে পড়ার প্রবণতা ইদানীংকালে বেড়েছে বহুগুণ। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কাছে বেসরকারি স্কুল একটা আকাক্ষার জায়গায় পরিণত হয়েছে। ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম অফ এডুকেশনের প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য জানাচ্ছে, ভারতের ২৫ কোটি স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ কোটিই পড়াশোনা করে বেসরকারি স্কুলে। তবে এই পরিস্থিতিতেও উপরের দিকে রইল বাংলার নাম। পশ্চিমবঙ্গের মাত্র ৯.৭ শতাংশ ছাত্র বেসরকারি স্কুলে পড়ছে বলেই জানাচ্ছে এই সমীক্ষা।
জানা গেছে, বাংলায় সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা প্রায় ১কোটি ৪৫ লক্ষ। অন্যদিকে বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে ১৫ লক্ষ ৭ হাজার শিক্ষার্থী। পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে বাংলার সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার পরিকাঠামোর ওপর ভরসা করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা। বাম-জমানার থেকে এই প্রবণতা খুব একটা পাল্টায়নি। বেড়েছে মাত্র ১.৩ শতাংশ।
পাশাপাশিই শিক্ষার হার বাড়াতে নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। বিনামূল্যে শিক্ষাপ্রদান, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজসাথী প্রভৃতি প্রকল্পও রয়েছে সরকারি স্কুল বেছে নেওয়ার মূলে। এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। গত কয়েক বছর ধরেই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। প্রশ্ন উঠেছিল সরকারি স্কুলগুলির পরিকাঠামো নিয়েই। কিন্তু এসবের মাঝেই নতুন পরিসংখ্যান প্রমাণ করে দিল আইসিএসই, সিবিএসই, এইএসই বোর্ডের তুলনায় এখনও ওয়েস্টবেঙ্গল বোর্ড এবং সরকারি স্কুলের চাহিদায় এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রিপোর্টের অনুমান লকডাউনের ফলে আরও বাড়তে পারে সরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা। কারণ বেসরকারি বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনের খরচ বিস্ময়চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই পরিস্থিতিতে।
তবে এই রিপোর্টে প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি তথ্য। সারা ভারতের মধ্যে প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার ঝোঁকেও উপরের দিকে রয়েছে বাংলা-সহ পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য। বাংলার ৮৩.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই শরণাপন্ন হয় প্রাইভেট টিউশনের কাছে। যা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। প্রথমস্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। যা এই পরিসংখ্যানের সামনেও প্রশ্ন তুলছে, শুধু খরচ এবং অন্যান্য সুবিধার জন্যেই কি সন্তানদের সরকারি স্কুলে পড়তে পাঠাচ্ছেন অভিভাবকরা?
আরও পড়ুন
শিক্ষার কোনো বয়স হয় না, স্কুলে ফিরে প্রমাণ করলেন ঝাড়খণ্ডের ৫৪ বছরের শিক্ষামন্ত্রী
Powered by Froala Editor