দেবীর নিরাপত্তায় রক্তমাংসের সিংহ, ১৫০ বছর ধরে কালনার রীতি এমনটাই

বড়-বড় পুজোয় নেতা থেকে সেলেব্রিটি— আনাগোনা চলে সকলেরই। তাঁদের দেখার জন্য উপচে পড়ে ভিড়। আর সেই ভিড়কে সামলানোর জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন রক্ষীরা। কিন্তু পুজোর আসল ভিআইপি যিনি, সেই মা দুর্গার জন্য কেন কোনও রক্ষীর বন্দোবস্ত নেই, সেই প্রশ্ন কারও মনে আসতেই পারে! তবে একটা জায়গায় নিয়মের ব্যাতিক্রম হয়। কালনার মহিষমর্দিনী পূজায়। এখানে প্রতিবছর, দেবীর নিরাপত্তার জন্য থাকে নিজস্ব রক্ষী।

কালনার অন্যতম পুরনো এই মহিষমর্দিনী পুজো। আর এই পুজোতেই দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় রক্ষীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন স্থানীয় সিংহ পরিবারের সদস্যরা। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত মাথায় পাগড়ি এঁটে, লাল জরির কাজ করা খাকি পোশাক পরে, তলোয়ার নিয়ে এই দায়িত্ব সামলে আসছেন তাঁরা। প্রতিমার গায়ের দামি গয়না, বাসনকোসন সমস্ত কিছু পাহারা দেন সিংহ পরিবারের নির্ধারিত ‘রক্ষী’। একসময়, দেবীর গয়না, বাসনপত্র ইত্যাদির নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তায় এই সিংহদের ওপরেই। বিসর্জনের আগে গয়না খোলা পর্যন্ত বজায় থাকে রক্ষীর পাহারাদারি।

বর্তমানে এই পুজোর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিবছর দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েই চলে। পুলিশ মোতায়েন থাকে ঠিকই, কিন্তু এই পুরনো রীতিকে কিছুতেই ত্যাগ করতে চান না বাসিন্দা এবং পুজো উদ্যোক্তারা। বাস্তবিকই, এখানে দেবীর দুই ‘সিংহ’কে নিয়েই সংসার।