গঙ্গোত্রী হিমবাহে গঙ্গার উৎসমুখ থেকে দৌড় শুরু করেছেন তিনি। দেখতে দেখতে কেটে গেল ২২ দিন। তবুও থামেননি মধ্যপ্রদেশের আল্ট্রা ম্যারাথন রানার অতুল কুমার চৌকসে। একেবারে গঙ্গাসাগরে গঙ্গার মোহনায় এসে থামবেন তিনি। গঙ্গার (Ganga River) দূষণ সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে এবার এমনই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন চৌকসে। তাঁর মতে, বর্তমান সময়ে সামগ্রিকভাবে পরিবেশ সচেতনতা প্রসারের কাজে প্রত্যেকের সাধ্যমতো এগিয়ে আসা উচিৎ। আর একজন দৌড়বিদ হিসাবে দৌড়কেই তিনি বেছে নিয়েছেন এই সচেতনতা তৈরির কাজে। ‘রান ফর গ্যাঙ্গেজ’ (Run for Ganges) নাম দিয়ে শুরু করেছেন তাঁর নিজের দৌড়।
গঙ্গা কেবল একটি নদী নয়, গঙ্গা ভারতের আত্মা – এমনটাই মনে করেন চৌকসে। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য ছোটোবড়ো নদীগুলির অবস্থা নিয়েও আশঙ্কিত তিনি। ক্রমশ প্লাস্টিকে ছেয়ে যাচ্ছে প্রতিটা নদী। সেইসঙ্গে জলে নানারকম বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি তো রয়েছেই। বিগত কয়েক বছর ধরে এই দূষণের পরিমাণ আরও বাড়ছে। গঙ্গা, গোদাবরী, নর্মদার মতো বড়ো নদীগুলোও আজ বিলুপ্তির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্তত তাদের জল ব্যবহারের যথেষ্ট উপযোগী নয়। অনেক ছোটো-বড়ো নদী তো ইতিমধ্যে একেবারেই হারিয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এই পরিস্থিতি বদলাতে না পারলে আগামীদিনে যথেষ্ট বিপদ রয়েছে বলেই মনে করছেন চৌকসে।
গত ৩ নভেম্বর তাই কাঁধে একটি ১৫০ কেজির ট্রলি চাপিয়ে দৌড় শুরু করেছেন তিনি। এতে রয়েছে স্লিপিং ব্যাগ, জিপিএস, কিছু ওষুধপত্রের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস রয়েছে। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীগুলি চার্জ দেওয়ার জন্য ট্রলির গায়েই রয়েছে সোলার প্যানেল। এটাও পরিবেশ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে একটি বার্তা। ৩ হাজার কিলোমিটারের যাত্রাপথে বেশ কিছু জায়গায় সচেতনতা প্রচারের জন্য সভাও করবেন তিনি। ইতিমধ্যে হৃষিকেশের কাছে এমনই একটি সভা করেছেন তিনি। পথ শেষ হতে এখনও অন্তত ৯০-১০০ দিন বাকি। কলকাতা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আরও কয়েকটি জায়গায় সভা করার কথাও ভেবেছেন তিনি।
২০১৭ সালে ১৭৬০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত খার্দুংলা পাসে ৭২ কিলোমিটার দৌড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর ঠিক পরের দিন লাদাখ উপত্যকায় ৪২.১ কিলোমিটারের ম্যারাথন দৌড় সম্পূর্ণ করেছেন তিনি। সারা পৃথিবীকে চমকে দেওয়া সেই দৌড়বিদ এবার দৌড়চ্ছেন গঙ্গাকে বাঁচাতে। মানুষ যদি এই উদ্যোগ থেকে একটু হলেও সচেতন হয়, তাহলে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যেতে পারে।
Powered by Froala Editor