‘লাভ জিহাদ’ – যে শব্দটা বারবার ঘুরে ঘুরে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। কাকে বলে ‘লাভ জিহাদ’? দুই ভিন্ন ধর্মের মানুষ একে অপরকে বিয়ে করলে তাকে বলে? সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় লাভ জিহাদ বিরোধী বিল আসতে চলেছে। আর সেই সূত্রেই আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি। একদিকে সংবিধান অনুযায়ী যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজের জীবনসঙ্গী নিজে স্থির করবেন। তাহলে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এই শব্দের তাৎপর্য কী?
তাৎপর্য খুঁজে পেতে গেলে যেতে হবে আরও গভীরে। কারণ আমাদের চারপাশে ঘটে চলা নানা ঘটনাকে ধর্মের চোখ দিয়ে দেখতে শেখানো হচ্ছে আমাদের। শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, দুই ভিন্ন ধর্মের মানুষ একে অপরকে বিয়ে করতেই পারে। কিন্তু তাদের বিয়ের অন্তত একমাস আগে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে রাখতে হবে। অথচ আমরা খুব ভালো করে জানি, সমাজের একটা বড়ো অংশে আজও ভিন্ন ধর্মে বিবাহ কত বড়ো চ্যালেঞ্জ। সিদ্ধান্ত নিতে হয় খুবই তাড়াতাড়ি। সেক্ষেত্রে প্রশাসনকে জানাতে গেলেও গোপন পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে পড়বে। তার অর্থ সবসময় এমনটা নয় যে কেউ কাউকে জোর করে বিয়ে করছে। ‘লাভ জিহাদ’ নাম দিয়ে এই পুরো সম্ভাবনাকেই একপ্রকার নষ্ট করতে চাইছে সরকার।
অন্যদিকে এই আইনের সপক্ষে উদাহরণ দিতে গিয়ে বলা হচ্ছে সুদূর হরিয়ানার একটি ঘটনা। সেখানে একজন মেয়ে একটি ছেলেকে বিয়ে করতে চায়নি বলে তাকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে এখানে অভিযুক্ত একজন মুসলমান। কিন্তু এরকম ঘটনা আমাদের চারপাশে হামেশাই ঘটছে। তার উপরে ধর্মের রং লাগানো হচ্ছে শুধু। নাহলে যে ‘জিহাদ’ শব্দটির সঙ্গে সাধারণভাবে সন্ত্রাসবাদী কাজকে মিলিয়ে দেখা হয়, তার সঙ্গে প্রেমের যোগাযোগ স্থাপন সত্যিই অবাক করে। অবশ্য ‘জিহাদ’ মানে তো প্রতিবাদ। আর প্রেম তো শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদেরই নাম। এই একুশে আইনকে জয় করেও প্রেম ঠিকই এগিয়ে যাবে এক আমরণ রক্ত রণাঙ্গন ধরে…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শ্মশানেই ‘বৃন্দাবন’, প্রেমের নিভৃতিও; ভোলবদলের রূপকার অন্ধ্রের কোল্ড-ড্রিঙ্কস বিক্রেতা