প্রতি বছর লাগানো হবে ১০ লক্ষ গাছ, ঘোষণা মাদাগাস্কার সরকারের

আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডের কিছু দূরে নির্মল সবুজ একটি দ্বীপ মাদাগাস্কার। পৃথিবীর বহু বিরল প্রজাতির গাছেদের বাস এখানে। দীর্ঘদিন সেই অরণ্যের মধ্যেই বেঁচে থেকেছেন বহু মানুষ। তারপর এলো বিদেশি বণিকের দল। সেই থেকে শুরু হল বৃক্ষছেদন। মাদাগাস্কার স্বাধীন হয়েছে ১৯৬০ সালে। ছ’টি দশক কেটে গিয়েছে। কিন্তু বনভূমি ধ্বংস করার প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়েনি। সেই গভীর অরণ্যের ৪০ শতাংশই মুছে গিয়েছে ইতিমধ্যে। বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে গাছেদের বহু প্রজাতি। তবে এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সেই বনভূমি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ। উদ্যোগ নিয়েছে মাদাগাস্কারের সরকার।

আরও পড়ুন
প্রতিটি নবজাতকের জন্য ১০টি করে গাছ লাগাবে হাঙ্গেরি সরকার, প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর

এইবছর সেদেশের স্বাধীনতার ৬০ বছর পূর্ণ হল। স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের মেজাজে আপামর দেশবাসী। এর মধ্যেই সরকার ঘোষণা করল, ফিরিয়ে আনা হবে প্রাচীন সেই বনভূমি। অরণ্যই যে সেদেশের ঐতিহ্য। তাই স্বাধীনতার প্রতিটি বছরের জন্য লাগানো হবে ১ মিলিয়ন করে গাছ। অর্থাৎ ৬০ বছরের জন্য ৬০ মিলিয়ন গাছ। সংখ্যাটা সত্যিই অবাক করার মতো।

আরও পড়ুন
একটি করে গাছ অথবা অসহায় প্রাণীর দায়িত্ব নিতে হবে, ৪০তম জন্মদিনে প্রজাদের কাছে উপহার চাইলেন রাজা

জানুয়ারি মাসেই এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডি রাজোয়েলিনা। সেইসঙ্গে সমস্ত মানুষকে আহ্বান করেছেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের কাজে এগিয়ে আসতে। শুধুই তো গাছ নয়, অরণ্যকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকে অনেক প্রাণীও। অন্তত কয়েকশো প্রজাতির লেমুরের বাস এখানে। বাঁচিয়ে রাখতে হবে তাদেরও। প্রথমে অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন, এই বিরাট প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ আদৌ সম্ভব হবে কিনা! তবে ইতিমধ্যে সরকারের তরফ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে সমস্ত মানুষ বনভূমির দেখভাল করতে পারে। আর সেইসঙ্গে এগিয়ে এসেছেন সাধারণ মানুষও। এই অরণ্যের মধ্যেই তাঁদের জীবন কাটত একসময়। সেসব তো এখনও বিস্মৃত অতীত হয়ে যায়নি!

আরও পড়ুন
জায়গা নেই ঘরে, গাছের ডালেই ‘কোয়ারেন্টাইন’ পুরুলিয়ার শ্রমিকদের

আজকাল বিপন্ন পরিবেশকে বাঁচানোর কথা তো সবাই বলছেন। কিন্তু সমস্ত দেশ তো এগিয়ে আসছে না এইভাবে। মাদাগাস্কার সরকারের এই উদ্যোগ সেই জায়গায় বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে বৈকি। সেইসঙ্গে সমস্ত পৃথিবী জুড়েই এমন উদ্যোগের অপেক্ষা থেকে যায়। ক্রমাগত পরিবেশ ধ্বংস করে আমাদের সাময়িক বিলাসিতা মিটতে পারে, কিন্তু আখেরে তো আমাদের বিপদই ঘনিয়ে আসছে।