মাত্র একমাস আগেও সারা দেশজুড়ে শোনা যাচ্ছিল অক্সিজেনের হাহাকার। করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গ আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে অক্সিজেনের গুরুত্ব। আর অক্সিজেনের প্রাকৃতিক উৎস বলতে একমাত্র গাছ। এই সাধারণ কথাটি মাথায় রেখেই পাঞ্জাবের লুধিয়ানা শহরের স্কুলপড়ুয়ারা এগিয়ে এসেছে গাছ লাগানোর কাজে। সম্প্রতি ৭৫০টি নতুন চারাগাছ রোপণ করল তারা। আর এই উদ্যোগের নাম তারা রেখেছে ‘মাইক্রো অক্সিজেন চেম্বার’।
রবিবার সকালেই শহরের পরিবেশপ্রেমী দম্পতি রোহিত মেহরা ও গীতাঞ্জলি মেহরার নেতৃত্বে রাখবাগ এলাকায় জড়ো হয়েছিল ১০ জন স্কুল পড়ুয়া। এদের কেউ সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া, কেউ একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণীর। তবে এই বয়সেই প্রত্যেকেই বুঝেছে একটি কথা, এই পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য গাছেদের বেঁচে থাকাও আবশ্যক। তারা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে শহরের বাতাস প্রতিনিয়ত দূষক গ্যাসে ভরে উঠছে। মানুষের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালানো এমনিতেই কঠিন হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় একমাত্র গাছই পারে বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ কমিয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে।
মেহরা দম্পতি এই স্কুলপড়ুয়াদের নাম দিয়েছেন ‘গ্রিন ওয়ারিয়র’। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, ইতিপূর্বে ভারতের কোথাও স্কুলপড়ুয়াদের উদ্যোগে এত বড়ো বৃক্ষরোপন কর্মসূচি হয়নি। নবীন প্রজন্মের এই অংশগ্রহণই পারে আগামীদিনের পৃথিবীকে সুরক্ষিত করতে। পড়ুয়ারা জানিয়েছে তারা আগামী দুমাস চারাগাছগুলির নিয়মিত পরিচর্যা করবে। আর কিছুদিনের মধ্যেই ভারতে বর্ষা এসে পড়বে। তাই গাছ লাগানোর জন্য এই সময়টিকেই বেছে নিয়েছে তারা। নিজেদের এই উদ্যোগের পাশাপাশি শহরের অন্যান্য মানুষদেরও নিজেদের সাধ্যমতো গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছে পড়ুয়ারা। বিশেষ করে অন্যান্য স্কুল পড়ুয়াদেরও এই ধরণের উদ্যোগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন মনে করছে তারা।
সারা পৃথিবীজুড়েই এখন পরিবেশ দূষণ অন্যতম সমস্যা বলে বিবেচিত। উন্নত দেশগুলিতে ইতিমধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার নানা উদ্যোগ শুরু হয়ে গেলেও ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে সেই সুযোগ যথেষ্ট কম। এই পরিস্থিতিতে নবীন প্রজন্মের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সত্যিই এক ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করে।
আরও পড়ুন
গাছের পাতা থেকেই স্যানিটাইজার! আশ্চর্য দাবি উত্তরবঙ্গের গ্রামের!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দুই সহস্রাধিক গাছের অভিভাবক তিনি, বার্ধক্যও দমাতে পারেনি পুরুলিয়ার দুখু মাঝি-কে