জলবিদ্যুৎ তৈরির জন্য প্রয়োজন বিরাট জলাধার। তাই পাশাপাশি দুটি হ্রদকে যুক্ত করে ফেলা হল। সেইসঙ্গে তৈরি হল নতুন বাঁধ। আর এই বাঁধের জল ছাড়তেই তা বন্যার মতো ভাসিয়ে নিয়ে গেল আস্ত একটি গ্রামকে। ১৯৫০ সালে ঠিক এভাবেই হারিয়ে গিয়েছিল ইতালির কিউরন গ্রাম। আশ্রয় হারিয়েছিল ১৬০টি পরিবার। তবে ক্রমশ মানুষ সেইসব ইতিহাস ভুলে গিয়েছিল। জলবিদ্যুতের উৎসের পাশাপাশি রেসিয়া লেক হয়ে উঠেছিল পর্যটকদেরও আকর্ষণের জায়গা। ৭১ বছর পর আবারও সেই ভয়ঙ্কর ইতিহাস সামনে উঠে এল। সৌজন্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ছবি।
ইতালির সাউথ টায়রোল অঞ্চলের মানবসৃষ্ট হ্রদ রেসিয়া। কিছুদিন আগেই কোনো এক ব্যক্তি সেখানে গিয়ে দেখতে পান হ্রদের জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে। ঠিক কী কারণে হ্রদের জল নেমেছে, তা জানা যায়নি। কিন্তু প্রায় শুকিয়ে আসা সেই হ্রদ থেকে মুখ বাড়িয়ে দিয়েছে ৭১ বছরের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। কিউরন শহরের ধ্বংসাবশেষ। সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে ভাইরাল হয়ে উঠেছে সেই ছবি। কোথাও দেখা যাচ্ছে কোনো বাড়ির ভাঙা অংশ। ছাদ ভেঙে পড়েছে। দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটা দেওয়াল। কোথাও আবার বাড়ির কিছুই নেই, কিন্তু সিঁড়ির একটা অংশ থেকে গিয়েছে। পরিপূর্ণ হ্রদের জলস্তরের উপরে মাথা তুলে দাঁড়ায় না কেউই। তবে জল শুকিয়ে আসায় তাদের অস্তিত্ব প্রকাশ পেল আবারও।
অবশ্য কিউরন গ্রামের একটি অবশেষ সবার চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে সবসময়। সেটি হল প্রাচীন গির্জার চূড়া। গির্জাটি জলের নিচে নিমজ্জিত হয়ে গেলেও তার চূড়া সবসময় উপরে থাকে। আর এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতেই আসেন কতজন। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য নিয়মিত তার পরিচর্যাও করে হ্রদের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের কবলে পড়ে যে একটি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল, সেই ইতিহাস আলোচনার আড়ালেই থেকে যায়। হয়তো এই ছবিগুলো ভাইরাল না হলে ইতিহাসও হারিয়ে যেত।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মজবুত করতে হবে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, করোনা-মোকাবিলায় নিদান চিকিৎসকদের