পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। গুটিকয়েক দেশ বাদ দিয়ে, বাকি সব জায়গাতেই থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস। মানুষ সুরক্ষিত নেই কোথাও। কিন্তু এরই মধ্যেও একজন রয়েছেন বহাল তবিয়তে। মাঝসমুদ্রে নিজের বোটে রয়েছেন তিনি। লক্ষ্য ছিল পৃথিবী পরিক্রমার। এখনও সেই কাজেই আছেন, তবে এই করোনার পরিবেশ থেকে শতহস্ত দূরে।
গত বছর অক্টোবরেই জলপথে পৃথিবী ঘোরার শপথ নিয়েছিলেন কানাডার বার্থ তের-হার্ট। পূর্বপুরুষরা একসময় সমুদ্র দাপিয়ে বেরিয়েছে। সেই’ রক্ত’ তাঁর ভেতরেও রয়েছে সমানভাবে। এই যাত্রাটিও অভিনব। কোনো অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্র ছিল না তাঁর সঙ্গে। ইচ্ছে করেই রাখেননি। বার্থ চেয়েছিলেন, পুরনো দিনে যেরকম ভাবে সমুদ্র পাড়ি দিত নাবিকরা, সেরকম ভাবেই তিনি পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবেন। সঙ্গে ‘যন্ত্র’ বলতে ছিল কেবল সেক্সট্যান্ট, অ্যালমানাক, পেন, লগবুক আর কাগজ। ব্যস, এই নিয়েই বেরিয়ে পড়েছিলেন পরিভ্রমণে…
তখনও করোনার সংক্রমণ শুরু হয়নি। ডিসেম্বরে চিনে দেখা যায় করোনার উৎপাত। পরে নতুন বছরে পা দেওয়ার পর অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। আর আজকে কী অবস্থা, সেটা আর বলে দিতে হবে না নিশ্চয়ই। এই হাহাকারের মধ্যে একপ্রকার নিশ্চিন্তই আছেন বার্থ। সমস্ত জায়গা দেশ ছেড়ে শত হস্ত দূরে, সমুদ্রের বুকে। কোথাও, কারোর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। ‘সোশ্যাল ডিসটেন্স’-এর আক্ষরিক উদাহরণ কী, সেটা না চাইতেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু করোনার কোনো খবর পৌঁছেছে তাঁর কাছে? জানা যায়নি।
বার্থ এখন অস্ট্রেলিয়ার কাছেই রয়েছেন, অবশ্যই সমুদ্রে। অনেকটা পথই পেরিয়ে এসেছেন। প্রথম নর্থ আমেরিকান হিসেবে কোনো আধুনিক যন্ত্র ছাড়াই পৃথিবী পরিক্রমার রেকর্ডটি হয়ত এবার করেই ফেলবেন। কিন্তু ফিরে যখন এমন পরিস্থিতি দেখবেন, তখন কী বলবেন? সেটার অপেক্ষাতেই এখন সবাই…