কেন্দ্র সরকারের নির্দেশিকা মেনে ১৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল লকডাউনের সময়সীমা। সোমবার আরেকবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হল ৩০ জুন পর্যন্ত। সেইসঙ্গে লকডাউনের বিধিনিষেধে বেশ কিছু শিথিলতার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যের লকডাউন সংক্রান্ত নতুন নিয়মাবলি।
কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে সমস্ত মন্দির-মসজিদ এবং ধর্মীয় উপাসনা কেন্দ্র। এতদিন সেখানে ১০ জনের বেশি মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এবার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫ করা হল।
পাশাপাশি সোমবার থেকে খুলে গেল রেস্টুরেন্ট, শপিং মল এবং অন্যান্য জনবহুল পরিষেবা। তবে এইসব জায়গাতেও একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি প্রবেশ করতে পারবেন না। একইরকম নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বিবাহ অনুষ্ঠান, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং অন্যান্য পারিবারিক অনুষ্ঠানেও।
এছাড়াও শনিবার সরকারি নির্দেশিকায় ঘোষণা করা হয়েছিল, এবার থেকে কোভিড-১৯এ মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকেও শেষবারের জন্য মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হবে। তবে তার জন্য বরাদ্দ সময় বেঁধে দেওয়া হবে ৩০ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মৃতদেহ দেখতে পারবেন তাঁরা।
দেশজুড়ে দুমাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলার পর একটু একটু করে ফিরে আসছে স্বাভাবিক ছন্দ। সেই স্রোতে রাজ্যেও ইতিমধ্যে খুলে গিয়েছে চা, পাট এবং নির্মাণ শিল্পের কেন্দ্রগুলি। সোমবার থেকে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সমস্ত সরকারি দপ্তরের কাজও। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় মানুষের চলাচল ছিল অন্য দিনের থেকে অনেক বেশি। শহর কলকাতায় বেশ কিছু জায়গায় শারীরিক দূরত্ব বজায় না রাখার অভিযোগও জমা পড়েছে। এসবের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর আজকের ঘোষণা রাজ্যের অর্থনীতির আগামী রূপরেখাকে অনেকটাই নিশ্চিত করল বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
তবে সরকারি দপ্তর স্বাভাবিকভাবে কাজ শুরু করলেও বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে বেশ জটিলতা দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা অধিকাংশই ফিরে গিয়েছেন নিজেদের রাজ্যে। তাছাড়া বেসরকারি বাস পরিবহনও এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। এই জটিলতা কাটিয়ে রাজ্য কীভাবে তার নিজের ছন্দে ফিরে আসে আবার, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন শিল্পপতি থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই।
Powered by Froala Editor