জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে কিংবা কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে আনতে অরণ্যায়নের বিকল্প নেই। পারতপক্ষে দেখতে গেলে দূষণ কমিয়ে এনে পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে অরণ্য। এমনকি গাছপালার উপস্থিতি বাড়তি মানসিক প্রশান্তি দেয় মানুষকে, এমন তথ্যও জানা উঠে এসেছিল গবেষণায়। এবার সাম্প্রতিক আরও একটি গবেষণা জানাল, শহরের বুকে গাছ-গাছালির উপস্থিতি অনেকাংশেই কমিয়ে আনে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
মূলত বায়ুমণ্ডলীয় দূষণের সঙ্গে স্পষ্ট যোগাযোগ রয়েছে স্ট্রোকের। প্রতি ঘন মিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রাম নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি প্রায় ৪ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের সম্ভাবনা। পাশাপাশি প্রতি মাইক্রোগ্রাম কার্বন-সমৃদ্ধ ধূলিকণার কারণে ৫ শতাংশ করে বৃদ্ধি পায় স্ট্রোকের ঝুঁকি। বলতে গেলে এই সবটার সঙ্গেই যোগ রয়েছে ট্রাফিক এবং পরিবহন ব্যবস্থার। উল্লেখ্য বয়স, ধূমপানের অভ্যাস কিংবা অন্যান্য কারণের জন্য দূষণজনিত ঝুঁকিতে কোনো প্রভাব পড়ে না।
মূলত, স্পেনের ক্যাতালোনিয়া অঞ্চলের ৩৫ লক্ষ মানুষের ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব সংক্রান্ত পরিসংখ্যান নিয়ে করা হয় এই গবেষণা। স্থানীয় হাসপাতাল এবং সরকারি হেলথকেয়ার সেন্টারগুলির থেকে নেওয়া হয়েছিল স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের ব্যক্তিগত তথ্য। পরবর্তীতে ভৌগলিক রেফারেন্সিং এবং ডিজাইনিং-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলিতে নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য বায়ুদূষকের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দেখা যায়, পার্ক কিংবা শহুরে বনাঞ্চল সংলগ্ন বসতিতে স্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অনেকটাই কম। অন্যদিকে দূষকের মাত্রার বিশ্লেষণ জানাচ্ছে, প্রায় ১৫-১৬ শতাংশ স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমিয়ে আনে গাছের উপস্থিতি। বিশেষত যাঁরা পার্কের ৩০০ মিটারের মধ্যেই বসবাস করেন, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কম।
সম্প্রতি, এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি। কাতালনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমীক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বোস্টন, হার্ভার্ড-সহ একাধিক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও। স্ট্রোকের পরিসংখ্যানের দিক থেকে দেখতে গেলে, ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান রয়েছে একদম উপরের দিকেই। রাজ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফল হলে, স্ট্রোকের ঘটনাও খানিক হ্রাস পাবে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো…
Powered by Froala Editor