নাম গোল্লাম, তবে উপন্যাস বা অ্যানিমেশনের চরিত্র নয়। এই চরিত্রের আগমন সুদূর অতীত থেকে। যখন পৃথিবীতে এত মহাদেশের জন্ম হয়নি। শুধু বৃহৎ স্থলভাগ ভেঙে গিয়েছে দুটি অসমান টুকরোতে। ঠিক সেই সময়ের ইতিহাস বুকে নিয়ে আজও বেঁচে আছে একটি প্রাণী। এক ধরনের মাছ। সম্প্রতি কেরালায় যার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তবে মৃত নয়। পাথরের নীচে অন্ধকার জলের মধ্যেই দিব্যি বেঁচে আছে এবং বংশবিস্তার করে চলেছে এই স্নেকহেড ফিস। লর্ড অফ দ্যা রিং-এর হবিট চরিত্রটির নামেই তাই এই প্রজাতির নাম রাখা হয়েছে গোল্লাম।
বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক গবেষণার পরে জানিয়েছেন, স্নেকহেড গোল্লাম ফিস আর পাঁচটা স্নেকহেড ফিসের থেকে একটু আলাদা। মানুষের জন্মের বহু আগে এর বিবর্তন থমকে গিয়েছে। অর্থাৎ একে জীবন্ত জীবাশ্ম বলা উচিৎ। পাথরের নীচে অন্ধকার জলের মধ্যে বাস করার কারণেই বাইরের প্রকৃতির বদলে যাওয়ার প্রভাবও এড়াতে পেরেছে এই মাছ। অন্যান্য স্নেকহেড ফিসের থেকে এর পরিবার আলাদা। এবং চেহারাগতভাবেও বেশ কিছু পার্থক্য আছে বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
ঠিক কত বছর আগে এই প্রাণীর বিবর্তন থমকে গিয়েছে, সেকথা বলা শক্ত। মনে করা হচ্ছে আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন বছর আগে দক্ষিণ ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে চলে আসে এই মাছ। আর তারপর থেকেই আর খুব বেশি পরিবর্তন ঘটেনি। যেহেতু এই মাছ এখনও বেঁচে আছে, তাই বিবর্তনের ইতিহাস বুঝতে এই মাছ যে অত্যন্ত সহায়ক হয়ে উঠবে, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া অতদিন আগে পৃথিবীর আবহাওয়া কেমন ছিল, তারও আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে গবেষণার থেকে। অবশ্য অপরিকল্পিত গবেষণার ফলে এদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আশা করা যায়, সমস্ত সচেতনতা নিয়েই ভালোভাবে গবেষণার কাজ শুরু করবেন বিজ্ঞানীরা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পৃথিবীর উষ্ণতম অঞ্চলে এতদিন ‘লুকিয়ে’ ছিল এই জলচর প্রাণী!