হাসপাতালে যেতে ‘অনুমতি’ চাই স্বামীর, আফগানিস্তানের এক অন্তঃসত্ত্বার গল্প এমনই

বিস্তৃত নীল আকাশ, সামনে উঁচু নিচু পাহাড়। তার সামনেই নীল বোরখা পড়ে চলে যাচ্ছে দুজন মেয়ে। মুখ দেখা যায় না তাদের। শুধু শরীর নয়, সমস্ত দিক থেকেই আবদ্ধ তারা। সামনের উন্মুক্ত আকাশের দিকে তাকানো মানা। পাথুরে পথ, পাহাড়ের ভেতরেই তারা ঘুরপাক খায়…

একটি ফটোগ্রাফারের কাজ শুধুমাত্র ছবি তোলাই নয়, তাঁর ক্যামেরা দিয়ে তিনি একটি গল্প বলে যান। ঘটনার গভীর থেকে উঠে আসে সেই ছবি। ওপরের বর্ণনাটি সেইরকমই একটি ছবির। আফগানিস্তানে গিয়ে ছবিটি তুলেছিলেন আলোকচিত্রী লিনসে আদ্দারিও। সেখানকার মেয়েদের পরাধীনতা, পর্দাপ্রথা এবং সেই দমবন্ধ পরিস্থিতিকে মাত্র একটা ছবিতেই ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু, এরপরেও যে আরও বিস্ময় অপেক্ষা করে থাকবে, সেটা কে জানত?

ছবি তোলার পর তিনি লক্ষ্য করেন, ওই দুই মহিলার একজন অন্তঃসত্ত্বা। প্রসব বেদনা শুরু হয় তাঁর। লিনসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। উত্তরে ওই মহিলাটি জানান, হাসপাতালে যাওয়ার জন্য আগে তাঁর স্বামীর কাছে ‘অনুমতি’ নিতে হবে। এই কথাটি বিস্মিত করেছিল লিনসে-কে। স্বামীর অনুমতি নেওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়েটিকে। সেখানেই সন্তান জন্ম দেন তিনি।

কিন্তু অনেকেরই এমন ‘সৌভাগ্য’ হয় না। স্বাস্থ্যগত কারণে অনেক মহিলাই মারা যান। নাবালিকা অবস্থায় সন্তান ধারণের ঘটনা তো প্রায় ‘স্বাভাবিকই’ ওখানে। নিজের ছবির মাধ্যমেই আফগানিস্তানে মেয়েদের অবস্থাকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। দশকের অন্যতম সেরা ছবির তকমাও পেয়েছে ছবিটি। কিন্তু, আসল চিত্রটা কবে বদলাবে? ছবিটাই বারবার সেই প্রশ্ন রেখে যায় আমাদের সামনে…

ছবি ঋণ- লিনসে আদ্দারিও
তথ্যসূত্র- ন্যাশনাল জিওগ্রাফি

More From Author See More

Latest News See More