কথায় আছে ‘রেকর্ড গড়া হয় ভাঙার জন্যই’। কার্যত এই প্রবাদবাক্যকেই বাস্তবে আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন ফর্মুলা-ওয়ান রেসার লুইস হ্যামিলটন। তুরস্কের গ্র্যান্ড প্রিক্স জিতে গত রবিবারই স্পর্শ করলেন মাইকেল শুমাখারকে। দুই কিংবদন্তীর ঝুলিতেই যার ফলে গ্র্যান্ড প্রিক্সের সংখ্যা দাঁড়াল সাত। পাশপাশি ফর্মুলা-ওয়ানে তাঁর ট্রফির সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪। তৈরি হল আরও এক নতুন রেকর্ড, ফর্মুলা-ওয়ান জগতে এক নয়া ইতিহাস।
২০০৮ সালে ম্যাকলরেন গ্রান্ড প্রিক্স জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন হ্যামিলটন। তবে তারপর যেন ফর্মুলা-ওয়ানের সেরার মুকুট চলে গিয়েছিল শুমাখারের মাথায়। অপেক্ষা করতে হয়েছিল টানা পাঁচ বছর। ২০১৪ সালে আবার জেতার ট্র্যাকে ফিরেছিলেন হ্যামিলটন। দেখিয়েছিলেন খেতাবি দৌড়ের বাইরে হারিয়ে যাননি তিনি। পরের ৫ বছরের মধ্যে চারটিতেই জয় এনে তা প্রমাণ করলেন আবার।
তবে রবিবারের জয় ছিল এক কথায় ঐতিহাসিক। জেতার পর গাড়ির ভিতরে বসে কেঁদে ফেলেছিলেন হ্যামিলটন। বিশ্বাস হচ্ছিল না নিজেরই। কারণ রেস শুরুই হয়েছিল বেশ কয়েকটা ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে। চূড়ান্ত ঠান্ডা আর বৃষ্টির জন্য পিচ্ছিল পরিস্থিতিতে বারবার পিছলে গিয়েছিল গাড়ির চাকা। পাঁচ নম্বর ল্যাপে হ্যামিলটন ছিলেন ষষ্ঠ স্থানে। প্রথম স্থানে থাকা ল্যান্স স্ট্রলের থেকে সময়ের ব্যবধান ছিল ২০ সেকেন্ড। যা ফর্মুলা ওয়ানের ক্ষেত্রে আকাশ-পাতালের পার্থক্যই। তবুও দক্ষতা আর অভিজ্ঞতায় ভর করেই একে একে পেরিয়ে গেলেন সকলে। শেষ হাসি হাসলেন তিনিই।
ছোটো থেকেই বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন হ্যামিলটন। ক্যারাটের ক্লাসই শিখিয়েছিল ঘুরে দাঁড়াতে। তৈরি করে দিয়েছিল লড়াকু মানসিকতা। যুগ পেরিয়ে এসে রেসিংয়ের জগতেও সেই মানসিকতাটাই ধরে রেখেছেন তিনি। প্রতিটি জয়ই যেন হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের ভাষা। ব্রিটেনে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের কণ্ঠই এখন হ্যামিলটন...
Powered by Froala Editor