প্রয়াত আরেক কিংবদন্তি। গত ১৬ই এপ্রিল, প্রাগ শহরের নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জিন ডায়েচ। তবে মৃত্যুর কারণ এখনও জানানো হয়নি স্পষ্টভাবে। তাঁর চেক প্রকাশক, পিটার হিমেল তাঁর মৃত্যুসংবাদ জানান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
একাধিকবার পাল্টেছেন নিজের কাজের জায়গা। বর্ণময় জীবন ছিল তাঁর। যদিও ‘জিন’ নামটি নিজের তৈরি করা। পুরো নাম, ইউজিন মেরিল ডায়েচ। প্রথম জীবনে কাজ করেছিলেন ড্রাফটসম্যান হিসাবে। উত্তর আমেরিকায়। পরে যোগ দেন সৈন্য বিভাগে। মিলিটারি কাজের খসড়া তৈরি করতে। সেখান থেকে পাইলট ট্রেনিং। তবে ১৯৪৪ সালে শারীরিক কারণের জন্য সরে আসতে হয় সেনাবাহিনী থেকে। শুরু হয় নতুন জীবন। প্রবেশ করেন চিত্রশিল্পের বাণিজ্যিক জগতে। হাত ধরেন অ্যানিমেশনের।
১৯৫৮ সালে জিন তাঁর সিনেমা ‘সিডনি’স ফ্যামিলি ট্রি’-এর দৌলতে মনোনীত হন অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্য। পুরস্কার না পেলেও থামিয়ে রাখেননি নিজের কাজ। ঠিক দু’বছর পরে, ১৯৬০ সালে হাতে আসে অ্যাকাডেমি। তাঁর তৈরি ‘মুনরো’, সেরা অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্মের জন্য সম্মানিত হয়। এই বিভাগেই আরো দু’বার পরে মনোনীত হয়েছিলেন জিন ডায়েচ। ‘নাদনিক’ এবং ‘হাউ টু অ্যাভয়েড ফ্রেন্ডশিপ’-এর জন্য।
পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন টোয়েন্টি সেঞ্চুরি ফক্সের অন্তর্গত টেরিটুনে। সেখানেই তাঁর হাত ধরে আসে ‘সিডনি দ্য এলিফ্যান্ট’, ‘টেরিবল থমসন’, ‘ক্লায়েন্ট ক্লবার’, ‘গ্যাসটন লি ক্রেয়ন’।
ষাটের দশকে কাজ করেছিলেন রেমব্র্যান্ট ফিল্মে। ‘পপাই দ্য সেলার’-এর বেশ কিছু কার্টুন তৈরি করেন তিনি। ‘মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার’ এর জন্য বানান এক ডজনেরও বেশি ‘টম এন্ড জেরি’র ছোটো ছোটো ভিডিও। ‘ক্রেজি ক্যাট’ নামের একটি টেলিভিশন সিরিজের কোপ্রডিউসার এবং ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেছিলেন। এছাড়া ‘দ্য ব্লাফারস’ সিরিজটিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল শিশুমহলে।
মৃত্যুর আগে স্ত্রী এবং তিন পুত্রের সঙ্গেই থাকতেন জিন। তাঁর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশের পর শোকস্তব্ধ সকলেই। থেকে যাবে তাঁর কাজগুলি। শিশুদের অনাবিল আনন্দ দিয়ে যাবে যুগের পর যুগে। শুধু বয়েস আর বাড়বে না জিনের…