ভারতবর্ষ সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠা একটি দেশ। এ দেশে ঐক্যের মাঝেও রয়েছে বৈচিত্র। ধর্মের রং ভুলে গিয়ে নানা উৎসবে এদেশের মানুষ এক হয়ে ওঠে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে অনেক কিছুই পাল্টেছে, ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে যাচ্ছে রাজনীতি, বাড়ছে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ। ধর্মের কারণে খুন হয়ে যাচ্ছে বহু মানুষ। এর মাঝেও কিছু কিছু মানুষ তাদের কাজের মধ্যে দিয়ে আজও বজায় রেখেছে দেশের ঐতিহ্য। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের আউশ গ্রামের কিছু মানুষের বহন করছে এমনই এক সম্প্রীতির বন্ধন। সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মাথায় ফেজ টুপি পরে লক্ষ্মীপুজো পালন করেন।
গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ বা জনমজুরি করে দিন গুজরান করেন। সেভাবে দুর্গাপুজোয় হয়ত নতুন জামাকাপড় জোটে না অনেকেরই। সেই গ্রামে দুর্গাপুজোর থেকেও ধুমধাম করে পালন করা হয় লক্ষ্মীপুজো। রীতিমত প্যান্ডলে করে, জাঁকজমক করে এই গ্রামে লক্ষ্মী পুজো করেন গ্রামবাসীরা। প্রায় ২০-২২ টি পরিবার এই গ্রামে লক্ষ্মী পুজো করেন।
এই গ্রামে হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের সমস্ত মানুষই এ-পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। ধর্মের কোনো রং না লাগিয়ে মুসলিমরা এই পুজোয় চাঁদা কাটতে বেরান। যারা দূরে চলে গেছে, অথচ শিকড়ের টান আজও বাড়িতে রয়ে গেছে, তারা এই লক্ষ্মী পুজোয় গ্রামে ফিরে আসেন। দুর্গাপুজোর থেকেও তাই এই পুজোর গুরুত্ব গ্রামে অনেক বেশি।
দেশে যখন ধর্ম নিয়ে এত হানাহানি, সেই সময় দাঁড়িয়ে এ ধরণের সম্প্রীতির ঘটনা আশার আলো জাগায়। ধর্মনিরপেক্ষতাই যে ভারতের ঐতিহ্য তার বার্তা বহন করে শিবদা গ্রামের এই পুজো।