ভূপৃষ্ঠ থেকে মাটির নিচে ফিরে যাচ্ছে লাভা, বিরল ঘটনার সাক্ষী গবেষকরা

ভানুয়াতু অঞ্চলের অ্যামব্রিম হ্রদ একটি পরিচিত ম্যাগমা হ্রদ। প্রায় ১৪ মিলিয়ন বর্গফুট আয়তনের ম্যাগমা অগ্নুৎপাতের ফলে হ্রদটি তৈরি হয়েছিল। বিরল প্রবাল ও লাল শৈবালের একটু বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছিল হ্রদকে ঘিরে। কিন্তু আচমকা সবটা পাল্টে যেতে থাকে। হ্রদের উপকূল অঞ্চল উঠে আসতে থাকে, এবং হ্রদটি শুকিয়ে যায়। সেইসঙ্গে নষ্ট হয়ে যায় বিরল একটি বাস্তুতন্ত্র।

ইবস মৌসল্লম ২০১৮ সালে যখন অ্যামব্রিম হ্রদে পৌঁছেছিলেন, তখন তার নৈসর্গিক চেহারা তাকে মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু সবটা মুছে যেতে দুই সপ্তাহও সময় লাগেনি। সমস্ত সবুজের সমারোহ মুছে ফেলে যেন শুধু সাদাকালো ছাইয়ের স্তূপ পড়ে আছে। আর অদ্ভুতভাবে হ্রদের সমস্ত লাভা উধাও। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন ভূতলে ফাটল ধরিয়ে লাভার স্তর অপেক্ষাকৃত নিচু কোনো অঞ্চলের দিকে সরে গেছে। কিন্তু দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পরে আসল কারণ ধরা পড়ে।

মৌসল্লমের নেতৃত্বে একটি গবেষণাদল ভূপৃষ্ঠ থেকে এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যৌথ পর্যবেক্ষণ চালাতে থাকে। আর তারপরেই দেখতে পান, হ্রদ থেকে প্রায় ৮ মাইল দূরের পালাম গ্রাম পর্যন্ত ভূগর্ভে গভীর ফাটল ছড়িয়ে পড়েছে। ঘনঘন ভূমিকম্প হতে থাকে। এবং নতুন করে অগ্নুৎপাতের সম্ভবনা দেখা দেয়। আর এইসব দেখেই বিজ্ঞানীদের অনুমান, হ্রদের মধ্যেকার ম্যাগমা পুনরায় মাটির নিচে প্রবেশ করেছে।

ভূগর্ভে ম্যাগমা স্তরের সম্প্রসারণের কারণেই বিরল এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান গবেষক টারা শ্রিভের। আগ্নেয়গিরি বিষয়ে গবেষণা যত এগোবে, এমনই নিত্যনতুন ঘটনার কথা জানা যাবে বলেই মনে করছেন তিনি। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই বোঝার চেষ্টা করছেন মাটির নীচে ম্যাগমার স্তরে ঠিক কী ধরণের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। অগ্নুৎপাতের ফলে বেরিয়ে আসা লাভা পুনরায় ভূগর্ভে ফেরত যাওয়া ঘটনায় অনেক অজানা তথ্য জানা যেতে পারে বলেই মনে করছেন গবেষকরা। পরিত্যক্ত হ্রদ থেকে বিভিন্ন গ্যাস ও শৈবালের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষানিরীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

Latest News See More