হিরের চেয়ে দামী রত্ন নীলকান্ত মণি। আর একটি মণির ওজন যদি হয় ৩১০ কেজি! না না, কোনো রূপকথার কাহিনি নয়। বরং শ্রীলঙ্কার মাটির নিচে সত্যি সত্যিই সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এমন একটি মণির। পৃথিবীর বৃহত্তম নীলকান্ত মণি (Blue Sapphire) তো বটেই, এটিই এখনও অবধি সন্ধান পাওয়া পৃথিবীর বৃহত্তম রত্ন। গত রবিবার সমস্ত প্রশাসনিক নিয়ম মেনে শ্রীলঙ্কার জাতীয় রত্ন ও অলঙ্কার কর্তৃপক্ষের হাতে রত্নটি তুলে দিলেন রতনপুরা (Ratanpura) শহরের মানুষরা।
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলোম্বিয়া শহর থেকে মাত্র ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রতনপুরা শহর। রতনপুরা পৃথিবীর রত্ন শহর নামেও পরিচিত। পান্না, চুনী, নীলার মতো বহু মূল্যবান রত্ন খুঁজে পাওয়া যায় সেখানকার মাটির নিচে। মাস তিনেক আগে তেমনই এক খননকার্যের সময় একটি বড়ো পাথরের স্তূপ খুঁজে পান শহরবাসীরা। যদিও বাইরে থেকে দেখে বক্সাইটের টুকরো ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না। তবে রত্ন চিনতে ভুল করেন না রতনপুরা শহরের মানুষরা। সেই পাথর তুলে এনে পরিষ্কার করতেই তার ভিতর থেকে নীল আভা ঠিকরে বেরিয়ে আসতে থাকে। আর ওজন করে দেখা যায়, পাথরটির ওজন ৩১০ কেজি। স্থানীয় মানুষরা এই রত্নের নাম রেখেছেন ‘কুইন অফ এশিয়া’।
কয়েকমাস আগে এই রতনপুরা থেকেই ৫১০ কেজির নীলকান্তমণি পাওয়া গিয়েছে। তবে সেটি একটি অখণ্ড রত্ন ছিল না। বরং অনেকগুলি ছোটো ছোটো নীলা মিলে তৈরি করেছিল একটি ক্লাস্টার। এই পাথরটিকে যদিও একটি অখণ্ড রত্ন বলেই মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আর শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা করেও দেখা যায়, তাঁদের ধারণা অভ্রান্ত। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রত্নটির গা থেকে খনিজ সরিয়ে তা এবার তুলে দিল কেন্দ্রের হাতে। করোনা অতিমারীতে অন্যান্য দেশের মতোই শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থাও বিধ্বস্ত। আর এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ এমন অমূল্য সম্পদ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই আশার আলো দেখছে সরকার। কিছুদিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে নিলামে তোলা হবে রত্নটি। তবে তার ব্যবহার সংক্রান্ত কিছু শর্তও আরোপ করতে চায় শ্রীলঙ্কা সরকার। পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো রত্নপাথরের মালিকানা শেষ পর্যন্ত কে পান, আপাতত সেটাই দেখার।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
হিরের থেকে নতুন খনিজের হদিশ