কলকাতা শহরের বুকে জন্ম, বেড়ে ওঠা কেদারনাথ ভট্টাচার্যের। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। সিঁথির আরবিটি বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা। ছোট থেকে কোনোদিনই ভাবেননি জীবনে বিরাট কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। কিন্তু সাফল্য কখনও তাঁর হাত ছেড়ে যায়নি। একের পর এক সিঁড়ি টপকেছেন। দেশবিদেশ থেকে পেয়েছেন অসংখ্য সম্মান। আর এবার আমেরিকার নেলসন ম্যান্ডেলা নোবেল পিস অ্যাওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হল তাঁকে। তিনি আর কেউ নন, বাংলা তো বটেই সারা দেশের অতি প্রিয় গায়ক কুমার শানু।
গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের পুনে শহরেই অনুষ্ঠিত হল নেলসন ম্যান্ডেলা নোবেল পিস পুরস্কার। আর এবারের পুরস্কার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৯ জন ভারতীয়। কুমার শানুও ছিলেন অতিথিদের তালিকাতেই। কিন্তু তাঁর হাতেই যে এবারের পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে, সে-কথা আগে থেকে জানতেন না কেউই। আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলিতভাবে নেলসন ম্যান্ডেলা নোবেল পিস অ্যাওয়ার্ড কমিটি পুরস্কার তুলে দেয় কুমার শানুর হাতে। গায়ক নিজেই সামাজিক মাধ্যমে এই পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা জানিয়েছেন। তবে আমেরিকান ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে এর আগেও সাম্মানিক ডক্টরেট উপাধি পেয়েছেন তিনি। সেটা ২০০১ সাল।
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের ‘তিনকন্যা’ সিনেমার সূত্রে নেপথ্যসঙ্গীতের জগতে আত্মপ্রকাশ শানু ভট্টাচার্যের। তারপর ১৯৮৯ সাল থেকে পাকাপাকি ঠিকানা মুম্বাই শহরে। বলিউডে কিশোর কুমারের সার্থক বিকল্প হয়ে উঠেছিলেন কুমার শানু। ১০০টিরও বেশি সিনেমায় গান গেয়েছেন তিনি। বাংলা, হিন্দির পাশাপাশি মারাঠি, অসমিয়া সহ ১৫টিরও বেশি ভাষায় গান গেয়েছেন। আর পুরস্কারের তালিকাও নেহাৎ কম নয়। ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে। তাঁর নামে আমেরিকায় ৩১ মার্চ তারিখটি পালন করা হয় কুমার শানু দিবস হিসাবে। অবশ্য এত সম্মানের পরেও নেলসন ম্যান্ডেলা পুরস্কার পেয়ে আপ্লুত গায়ক। একইসঙ্গে কিছুদিন আগে মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে মহারাষ্ট্র সম্মান পুরস্কার দেওয়া হয়। আজও এই সমস্ত পুরস্কার প্রাপ্তির মুহূর্তে ছেলেবেলার দিনগুলিতে ফিরে যান কেদারনাথ ভট্টাচার্য। আজও তিনি যে একইরকম বাঙালিই থেকে গিয়েছেন।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মুকেশের বাংলা গানে আপত্তি গ্রামাফোন কোম্পানির, ‘প্রতিশোধ’ নিলেন পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়