বছর চারেক আগের কথা। ২০১৭ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইএসইআর পুনে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অফ ওয়াটার মিউজিয়ামের যৌথ উদ্যোগে ভারতে গড়ে উঠেছিল ‘লিভিং ওয়াটার মিউজিয়াম’। লক্ষ্য ছিল ভারতের নদী এবং জলাধারের সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে ওয়াকিবহাল এবং পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পে তাঁদের অংশ করে তোলা। ২০১৮ সালে ইউনেস্কোর থেকে মেলে আর্থিক সহায়তা। এবার জলবায়ু রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কলকাতার এই ভার্চুয়াল মিউজিয়ামকে বিশেষ ‘পুরস্কার’ দিল মার্কিন দূতাবাস।
দক্ষিণবঙ্গের বাস্তুতন্ত্রের আধার বলা যেতে পারে ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে। তাছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের থেকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান, কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের হার বদলাতেও যথেষ্ট ভূমিকা নেয় ম্যানগ্রোভ। অথচ, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের এই বাস্তুতন্ত্র। সরকারের তরফে সংরক্ষণ প্রকল্প নেওয়া হলেও, সেইভাবে তা কার্যকর হয়নি বলেই অভিমত বিজ্ঞানীদের একাংশের। সুন্দরবনের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ম্যানগ্রোভের দানা ছড়ানো হলেও, তার বেশিরভাগটাই ভেসে যায় জোয়ারের স্রোতে।
এই সমস্যার সমাধান দিতেই বছর কয়েক আগে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল ‘লিভিং ওয়াটার মিউজিয়াম’। তৈরি করেছিল ম্যানগ্রোভের ‘সিড ব্যাঙ্ক’। তবে সরাসরি বীজ ছড়ানো নয়, বরং গাছের চারা তৈরি করে তা সুন্দরবনে প্রতিস্থাপনের বন্দোবস্ত করে সংস্থাটি। গোটা প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হয়েছিল মহিলাদের মাধ্যমে। এবার স্কুল ছাত্রদের চারা রোপণের প্রক্রিয়ার অংশ করে তুলতে আরও একটি উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি। সেইসঙ্গে স্থানীয় লোকশিল্পীদের নিয়ে আয়োজন করে একাধিক জনসচেতনতা প্রচার। উদ্দেশ্য, গান এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দেওয়া তরুণ প্রজন্মের কাছে। শুধু এপার বাংলাই নয়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থী এবং পরিবেশকর্মীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই প্রকল্পের মধ্যে। সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চলবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অন্তর্গত ম্যানগ্রোভ অরণ্যেও।
ওয়াটার মিউজিয়ামের এই প্রকল্পকেই এবার বিশেষ সম্মাননা জানাল মার্কিন দূতাবাস। হাতে তুলে দিল ১০ হাজার মার্কিন ডলারের আর্থিক অনুদান। এই প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন যে সুন্দরবনের চেহারা বদলে দিতে পারে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো…
আরও পড়ুন
তুষারপাতের পরিবর্তে বৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার মেরু অঞ্চল
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুকিয়ে যাচ্ছে হিমবাহ, ভাঙছে গ্রামের ঐক্যও; জলবায়ু পরিবর্তনের কোপ কাশ্মীরে