গতকালের কলকাতা এমনই সব ঘটনার সাক্ষী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা আসার প্রতিবাদে ভেঙে পড়েছে শহর। ঘুম নেই চোখে। প্রবল শীতেও বাড়ি ফেরার কথা ভুলেও ভাবেননি প্রতিবাদীরা। কারা এই প্রতিবাদী? ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। এছাড়াও আছেন সাধারণ মানুষ। কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ – বয়সের বাছবিছার নেই। আর এই প্রতিবাদ-সমাবেশে, শ্লোগান-মিছিলের পাশাপাশি হাতিয়ার হয়ে উঠল পোস্টার, গান, এমনকি কবিতাও।
দিনকয়েক আগেই ভারতজুড়ে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে আমরা দেখেছি পোস্টারের অভিনবত্ব। সোশ্যাল মিডিয়ার মিম থেকে শুরু করে স্ট্যাটাস – সবই জায়গা করে নিয়েছে পোস্টারে। ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে প্রতিবাদ হিসেবে কার্টুন বা দেওয়াল লিখনের উদাহরণ দেখেছে আগেকার প্রজন্মগুলি। কিন্তু মিমের শ্লেষের মাধ্যমে শাসককে বিদ্ধ করার এই প্রবণতা নিঃসন্দেহে এই প্রজন্মের ফসল।
গতকালের কলকাতাও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ফেসবুক-টুইটারে ঘুরে বেড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ব্যাঙ্গ। প্রতিবাদের ধরণ নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। প্রধানমন্ত্রীর কলকাতায় আগমন উপলক্ষ্যে এই আন্দোলনকে ‘অসাড়’ও বলতে পারেন অনেকেই। কিন্তু এই অভিনবত্বকে অস্বীকার করা যায় কি?
একই সঙ্গে প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে উঠে এসেছে সংস্কৃতির নানা অঙ্গও। মধ্যরাতে ধর্মতলায় বসে কেউ পাঠ করছেন কবিতা। কেউ আবার গান লিখে, সুর বেঁধে গাইছেন সেখানেই। বাড়িতে গান বাঁধছেন পল্লুব কীর্তনীয়া, বিপুল চক্রবর্তী। দলমত নির্বিশেষে ‘নিদ্রিত ভারত’ যেন জেগে উঠেছে এক লহমায়। সমস্ত সৃষ্টিশীলতা জড়ো হচ্ছে প্রতিবাদে। স্মরণাতীত কালে এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের উদাহরণ আর খুঁজে পাচ্ছেন না প্রবীণরাও।
ছবি ঋণ - ফেসবুক