বিগত ডিসেম্বর জুড়ে কলকাতা-সহ গোটা দেশ দেখেছে সম্মিলিত ছাত্র আন্দোলন। এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে বারবার। প্রতিবাদ করেছে ছাত্ররা, পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষও। শুধু এই দুটো নয়, সামগ্রিকভাবে ভারতের পরিস্থিতিই উঠে এসেছে তাঁদের আলোচনায়। এই অবস্থায়, নতুন বছরের শুরুতেই কলকাতা দেখল আরও দুটো মিছিল। সিএএ-এনআরসি থাকলেও যে আন্দোলনের মূল সুর ছিল ফ্যাসিবাদ ও পিতৃতান্ত্রিকতার বিরোধিতা।
গত ৩ জানুয়ারি কলকাতার রাজপথ ঢেকে ছিল রামধনু রঙে। ধর্ম-লিঙ্গ ভেদে সবাই যে ছাতার তলায় এসে দাঁড়িয়েছিল। ভারতের প্রথম মহিলা শিক্ষক সাবিত্রীবাঈ ফুলে’র জন্মদিনকেই বেছে নিয়েছিল আয়োজকরা। শহিদ মিনার থেকে কেশব ভবন পর্যন্ত আয়োজিত হয় ‘মাস র্যালি’। দলে দলে যোগ দিয়েছিলেন সমকামী মানুষরা; সমাজ-রাষ্ট্র যাঁদের আজও এককোণে ঠেলে রেখেছে। শুধু তাঁরাই নয়, আরও বহু মানুষ পা মিলিয়েছিলেন এই মিছিলে। মুখে একটাই কথা, এনআরসি-সিএএ-এনপিআর বাতিল হোক।
তবে এই একটি ঘটনাই উল্লেখ্য নয়। বিগত কয়েক বছরে অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় আগ্রাসনই শুধু বাড়েনি। বেড়েছে ধর্ষণের ঘটনা। দিল্লি, কলকাতা, উন্নাও, কাঠুয়া, হায়দ্রাবাদ— গোটা দেশে নারীদের নিরাপত্তা বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এনআরসি ও নাগরিকত্বের পাশে এই ইস্যু নিয়ে ৪ জানুয়ারি নারীরা জড়ো হলেন কলকাতার নিউ মার্কেট অঞ্চলে। শ্লোগান ছিল— “শাড়ি কাপড় খুলব না, ডকুমেন্টস দেখাব না”। চোখে কালো কাপড় বেঁধে, কালো জামা পরে তাঁরা শোনালেন তাঁদের কথা। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, পিতৃতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে এমনই আওয়াজ শুনল শীতের কলকাতা। বৃষ্টি, ঠান্ডা কোনও কিছুই আটকাতে পারেনি যাকে।
চিত্র ঋণ - ফেসবুক