করোনা ভাইরাসের আক্রমণে যখন সমস্ত পৃথিবীর মতোই আমাদের দেশও আতঙ্কে জর্জরিত, তখন ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের মন প্রস্তুত না হলেও শরীর প্রস্তুত হয়ে উঠছে ক্রমশ। অন্তত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের দেওয়া তথ্য সেই কথাই বলছে। সারা দেশ থেকে র্যা ন্ডম স্যাম্পেল সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে পরিসংখ্যান তৈরি করে দেখা গিয়েছে মানুষের শরীরে একটু একটু করে তৈরি হচ্ছে করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডি। আর এই পরিমাণটা কলকাতা শহরের ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা বেশি।
আইসিএমআরের তথ্য অনুযায়ী কলকাতা শহরের ১৪.৩৯ শতাংশ মানুষের শরীরেই পাওয়া গিয়েছে করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডি। তালিকায় এর পরেই আছে রাজ্যের আরও দুটি জেলা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং আলিপুরদুয়ার। যদিও এই দুই জেলায় শতকরা হার যথাক্রমে ২.৫ এবং ১। এছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে, সেখানে ১ শতাংশের কম মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
প্রকৃতির মধ্যে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আমাদের শরীরে নিজে থেকেই তৈরি হয় অ্যান্টিবডি নামের একধরনের প্রোটিন। এক্ষেত্রে এই অ্যান্টিবডি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তৈরি। পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কলকাতা শহরে সংক্রমণের হার যথেষ্ট বেশি হওয়ার কারণেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়েছে।
তবে সংখ্যাটা ৫০ শতাংশের কম থাকায় এখনও আশ্বস্ত হওয়ার যথেষ্ট কারণ ঘটেনি বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে অনেক চিকিৎসকের মতে আইসিএমআর যথেষ্ট কম নমুনার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ফলে এখান থেকে কোনো সিদ্ধান্তে আসাও সম্ভব নয়। কিন্তু ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যখন চিকিৎসকরা কোনো ভ্যাকসিনের সাহায্যই এখনও পাননি, তখন মানুষের শরীরের এই প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যাবস্থাই আশার আলো দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা রোগীকে সুরক্ষিত রাখলেও সংক্রমণ রুখতে কোনো কাজেই হয়তো আসবে না। ফলে পৃথিবীজুড়ে বাড়তে থাকা সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যা এখনও রীতিমতো লাল চোখ দেখাচ্ছে। আদৌ কি মুক্তি মিলবে এই সংকট থেকে? সময়ই উত্তর দেবে।
আরও পড়ুন
১ কোটির গণ্ডি ছাড়াল করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত ৫ লক্ষ মানুষ!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনা, তৈলখনিতে অগ্নিকাণ্ড, বন্যা - একের পর এক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত অসম