মানিকতলায় অগ্নিবিধ্বস্ত শিশুদের হাতে পোশাক তুলে দিলেন কলকাতার ম্যাজিশিয়ানরা

মানুষের বিপদের মুহূর্তে মানুষই পাশে এসে দাঁড়ায় বারবার। এই কথাই আবার প্রমাণিত হল মানিকতলা খালপাড় বস্তিতে আগুন লাগার পর। গতকাল ভোরবেলায় হঠাৎ ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডের বিভীষিকা যখন বস্তিবাসীকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে, তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন মানুষই। মঙ্গলবার সকাল হতে না হতেই সেখানে পৌঁছে গেলেন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ম্যাজিক অ্যাসোসিয়েশন (ফিমা)-এর সম্পাদক কৌশিক এবং তাঁর সঙ্গীসাথীরা।

সোমবার ভোররাতে হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পড়ে মানিকতলা খালপাড় বস্তিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে পৌঁছয় দমকলের ৭টি ইঞ্জিন। অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ততক্ষণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পোশাক থেকে শুরু করে খাবার-দাবার সমস্তকিছু চলে গিয়েছে আগুনের গ্রাসে। কোনোরকমে এক পোশাকে তাঁরা আশ্রয় নেন পাশের একটি খোলা জায়গায়।

মানিকতলা খালপাড় এলাকার শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই পাঠশালা চালিয়ে আসছেন অধ্যাপক ইমানুল হক। তাঁর সূত্রে এর আগেও বস্তিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন স্যান্ড আর্টিস্ট কৌশিক। এর মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কথা জানতে পেরে তিনি না গিয়ে থাকতে পারেননি। তিনি যাবেন জানতে পেরে যোগ দেন ইন্দ্রজিৎ দাস এবং শুভদীপ মহালি নামে আরও দুই ব্যক্তি। অত্যন্ত অল্প সময়ে কোনোরকমে জোগাড় করা হয় শিশুদের জন্য জামাকাপড়। অধ্যাপক ইমানুল হকের উপস্থিতিতে বস্তির ৬০ জন কচিকাঁচার হাতে তুলে দেওয়া হয় পোশাক।

সোমবারের অগ্নিকাণ্ডে ১০০-র বেশি ঝুপড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মানুষের বেঁচে থাকার ন্যূনতম সরঞ্জামও তাঁরা উদ্ধার করে আনতে পারেননি। এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের সমস্তরকম সাহায্য পৌঁছে দেওয়া অবশ্য গুটিকয় মানুষের কাজ নয়। তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে বহু মানুষকে। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাকে। “কিন্তু বিপদের সময় যত দ্রুত সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায় সেই চেষ্টাই তো করা উচিৎ। আমাদের নিজেদেরও লকডাউনের ফলে উপার্জন নেই বললেই চলে। ম্যাজিকের সমস্ত শো বন্ধ। কিন্তু তার পরেও যতটুকু পেরেছি, সাহায্য করেছি।” বলছিলেন স্যান্ড আর্টিস্ট কৌশিক।

Powered by Froala Editor