চলমান ট্রামেই জাদুর প্রদর্শনী, শীঘ্রই পথে নামবে ম্যাজিক ট্রাম

কখনও দর্শকের মনের কথা আগে থেকেই বুঝে যাচ্ছেন জাদুকর। কখনও আবার দর্শককেই বাধ্য করছেন এমন একটি তাস বেছে নিতে, জাদুকরের হাতে যখন সেই একটি তাসই আছে। ঠিক এভাবেই কেটে গেল একটি বিকেল। গড়িয়াহাট ট্রাম ওয়ার্ল্ডে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তর এবং ফিমার উদ্যোগে শুরু হল নতুন পথচলা। পথ-চলতি ট্রামেই অনুষ্ঠিত হবে ম্যাজিক প্রদর্শনী।

জাদুকর দিবেন্দ্যুর ম্যাজিক

 

পরিকল্পনা হয়েছিল আগেই। আর তার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছিল অপেক্ষা। অভিনব এই উদ্যোগের অংশীদার প্রহরও। আর এই ত্রিবেণী সঙ্গমের মধ্যে দিয়েই আজ যাত্রা শুরু হল ট্রামে ম্যাজিক প্রদর্শনীর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফিমার জাদুকররা দেখালনে তাঁদের হাতের খেলা। এমনকি জাদুকর মানে যে শুধুই পুরুষ নন, সে-কথাও প্রমাণ করলেন মহিলা জাদুকর ঐশানী। ফিমার আরেক সদস্য দিব্যেন্দু নাথের কথায়, “জাদুর কথা বলতেই তো ভানুমতীর নাম মনে আসে!” এবার থেকে প্রতি শনি ও রবিবার ধর্মতলা থেকে ট্রাম ছাড়বে শ্যামবাজারের উদ্দেশ্যে। আর সেই ট্রামে হাজির থাকবেন জাদুকরেরা। শ্যামবাজার থেকে ফিরতি পথে ট্রাম এসে পৌঁছবে গড়িয়াহাট ট্রাম ওয়ার্ল্ডে।

খেলা দেখাচ্ছেন ম্যাজিশিয়ান রেভেন

 

ফিমার সদস্য দিব্যেন্দু নাথের কথায়, “রাজ্য পরিবহন দপ্তর, ফিমা, এবং প্রহরের উদ্যোগে এই যে নতুন পথচলা শুরু হতে চলেছে, এ এক বিরাট ব্যাপার। এমন উদ্যোগ ভারতের আর কোথাও সম্ভব নয়, কারণ আর কোথাও ট্রাম নেই। আর ট্রামের মধ্যে শহর ঘুরতে ঘুরতে যে দেখা, সেও তো ম্যাজিক্যাল। তাকেই আরও রঙিন করে তুলবে জাদুকরদের নিজস্ব খেলা।” তাঁর মতে এই উদ্যোগ জাদুকরদের জন্য বা জাদু শিল্পের জন্যও একটা নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দেবে। “জাদুকররা সরাসরি দর্শকদের মাঝে গিয়ে খেলা দেখাতে পারবেন। দর্শকরাও জানতে পারবেন, পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানের জন্য এনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। আবার তাঁদের ছেলেমেয়েরা ম্যাজিক শিখতে চাইলেও যোগাযোগ করতে পারবেন। এই সমস্ত সম্ভাবনার রাস্তাই খুলে দিচ্ছে এই উদ্যোগ।” জানালেন দিব্যেন্দু নাথ।

ম্যাজিকের অংশ হলেন পরিবহন দপ্তরের কর্মীরাও

 

অনুষ্ঠানের শেষে প্রহরের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখলেন অনিতেশ চক্রবর্তী। তাঁর কথাতেও উঠে এল জাদুশিল্পের সঙ্গে কলকাতার আত্মার সম্পর্কের কথা। তিনি বললেন, “ধর্মতলা থেকে ময়দানের গা ঘেঁষে, কলেজস্ট্রিটের উপর দিয়ে যখন এই ট্রাম ছুটে যাবে আর যাত্রীরা নিজেদের স্মার্টফোন থেকে চোখ সরিয়ে, নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা থামিয়ে দেখবেন জাদুকরের খেলা, তখন সমস্ত প্রয়াস সার্থক হবে।” ট্রামের পাশাপাশি ফেরিতেও ম্যাজিক দেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবহন দপ্তর ও ফিমা। ম্যাজিকপ্রিয় বাঙালির সার্বিক সহযোগিতা ও শুভকামনা নিয়ে এই পথচলা আগামীতে আরও ব্যাপক হয়ে উঠবে, এমনটাই আশা রইল।

Powered by Froala Editor