একদিকে করোনা, অন্যদিকে আমফান— দু’দুটো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে গেছে বাংলা। করোনার থাবা এখনও বহাল। আমফান চলে গেলেও, তার চিহ্ন এখনও ছড়িয়ে আছে সব জায়গায়। দক্ষিণবঙ্গ, বিশেষ করে সুন্দরবনের মানুষরা এখনও অন্ধকারে। মাথার ওপর ছাদ নেই অনেকের। এমন অবস্থায় ত্রাণ তো বটেই; অনেক ডাক্তাররাও পৌঁছে যাচ্ছেন সেখানে। কিন্তু সেখানেই থেকেই ব্যাতিক্রমী কাজ করেছেন তাঁদেরই একজন। একটা গোটা নৌকাকেই নিজের চেম্বার বানিয়ে নিয়েছেন। তার মাধ্যমেই চিকিৎসা ও ওষুধ তো বটেই, ত্রাণ নিয়েও পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি!
ডাঃ অজয় মিস্ত্রি এবং তাঁর ১৫ জনের দল বিগত বেশ বহুদিন ধরেই সুন্দরবনের গ্রামের মানুষগুলোর চিকিৎসা করছেন। লকডাউন শুরুর সময় থেকেই প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন তাঁরা। সেখানে মানুষের কীরকম সমস্যা, করোনার প্রকোপ কীরকম, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা এইসব ব্যাপার তাঁরা দেখেন। মাস্ক, স্যানিটাইজার পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করেন। তারপর আমফান সুন্দরবন ও দক্ষিণ ৪ পরগণার বিস্তীর্ণ জায়গার প্রবল ক্ষতি করে দিয়ে যায়। ঘরবাড়ি, জমি, পুকুর সমস্ত নষ্ট হয়ে যায়। কোভিডের পাশাপাশি আরও কঠিন সমস্যার মুখে পড়েন ওই মানুষগুলো।
এমন অবস্থায় আবারও মাঠে নামলেন ডাঃ অজয় মিস্ত্রি এবং তাঁর টিম। একটা নৌকাকেই বানিয়ে নিয়েছেন নিজের চেম্বার। তারপর ঘুরে ঘুরে সমস্ত জায়গায় চিকিৎসার কাজ করতে লাগলেন। কাজের পরিধিও বাড়ালেন। শুধু ডাক্তারিই নয়, ওই মানুষগুলোর কাছে খাবার, জামা, জলও পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ডাঃ অজয় মিস্ত্রি হলেন সুভাষিণী মিস্ত্রির সুযোগ্য পুত্র; যিনি হিউম্যানিটি হাসপাতাল তৈরি করেছেন, সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোর দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। যার জন্য ২০১৮ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারেও সম্মানিত হন তিনি। তাঁরই পুত্র হয়ে সেই ব্যাটন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অজয়বাবু। সরাসরি অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছেন। খোঁজ রাখছেন তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
এক সপ্তাহে কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়ল ২৫ শতাংশ, বেহাল অবস্থা রাজ্যে