ফিরছে ডবল ডেকার বাস, পুজোয় নস্টালজিয়ার ছোঁয়া কলকাতায়

ট্রাম, হলুদ ট্যাক্সি, ভিক্টোরিয়া, হাওড়া ব্রিজ, রসগোল্লা আর ডবল ডেকার। কলকাতা বলতে এমন উপমাই বোঝে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ। তবে ডবল ডেকারের দিন ফুরিয়েছিল ২০০৫ সালেই। তারপর থেকে শুধু স্মৃতির খাতাতে আর গল্প-কবিতাতেই খুঁজে পাওয়া যেত তার নাম। তবে দেড় দশক পরে কলকাতায় ফিরতে চলেছে সেই ডবল ডেকার। এই পুজোর মরশুমেই কলকাতাবাসীদের জন্য ভেসে এল সেই সুখবর।

আগামী মঙ্গলবার নবান্ন থেকে যাত্রা শুরু করবে দুটি ডবল ডেকার। উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মার্চ মাসেই বাস দুটি এসে হাজির হয়েছিল তিলোত্তমা কলকাতায়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তার চলাচল আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি তখন। পরিকল্পনা ছিল, রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশনের দায়িত্বে পরিচালিত হবে বাস দুটি। কলকাতায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষিত করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য। এতদিন পর্যটন দপ্তরের গ্যারেজেই থিতিয়ে ছিল বাস দুটি। তবে পুজোর কলকাতাতেই এবার নামতে চলেছে তারা। কর্পোরেশন চেয়ারম্যান গৌতম দেব গতকাল ঘোষণা করেন এমনটাই।

বলাই বাহুল্য, কলকাতার ডবল ডেকার আর ব্যবহৃত হবে না জন পরিবহনের জন্য। বরং তার ব্যবহার হবে লন্ডনের মতো সিটি ট্যুরিং-এ। সে কথা ভেবেই বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে তার চেহারাতেও। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখায় এই বাসের যে ‘বাঘমার্কা’ বিবরণ পাওয়া যায়, থাকবে না সেই চিহ্ন। বাসের রং-ও লাল থেকে বদলে হয়েছে নীল সাদা। আর দোতলা ছাদহীন, হুড খোলা। আর সেখানে ওঠার সিঁড়িও বাসের ভেতর দিয়েই। পুরনো বাসের মতো আলাদা করে দরজা থাকছে না আর।

সব মিলিয়ে মোট ৬৮টি আসন থাকছে এই ডবল ডেকারে। যার মধ্যে ছাদে রয়েছে ১৭টি। পাশাপাশি প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়েই বসছে অটোমেটিক দরজা, প্যানিক বাটন, সিসিটিভি ক্যামেরা, ডেস্টিনেশন কার্ড। তবে বাসের ভাড়া, কোথা থেকে শুরু করে কোথায়ই বা যাবে এই বাস, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি নবান্ন। 

১৯২৬ সাল থেকে শুরু করে ২০০৫ পর্যন্ত কলকাতায় রাজত্ব করেছে এই ডবল ডেকার। আর এই বাসের দোতলায় চড়াও একরকমের রাজকীয়তা ছিল শহরবাসীর কাছে। সেই স্বাদ যে আবার পাওয়া যাবে, তা ভেবেই আপ্লুত তিলোত্তমার মানুষজন। গণ-পরিবহনের বদলে না হয় একটু পর্যটনের ভঙ্গীতেই চড়া গেল তাতে। তবুও তো দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। কী ভাবছেন? এই পুজোতেই সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে দেখবেন নাকি?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বাস কন্ডাক্টর থেকে পুরস্কারজয়ী পরিচালক, মণিপুরের বিচিত্র জীবনের সাক্ষী অমর