রোজ সকালে এক কাপ চা না হলে বাঙালির দিন শুরু হয় না। কিন্তু এই দিন শুরুর কারিগর যাঁরা, সেই চা-বাগান শ্রমিকরা কেমন আছেন? তাঁদের খবর আমরা খুব কমই রাখি। বিশেষ করে এই করোনা পরিস্থিতিতে অন্য সমস্ত ক্ষেত্রের মতোই সংকটে চা বাগানও। ত্রাণ সরবরাহের কাজ যে একেবারে হয় না তা নয়, কিন্তু তাই বা কতটুকু?
“আসলে এদের জীবনে অভাবের গভীরতা এত বেশি যে কিছুতেই তা মেটানো যায় না।” বলছিলেন জলপাইগুড়ি ‘প্রতিবিম্ব’ গোষ্ঠীর কর্ণধার দেবধৃতা দাস। এই করোনা পরিস্থিতিতে বারবার চা বাগানের শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন তাঁরা। আর সম্প্রতি চা শ্রমিকদের জন্য কম্বল বিতরণ শুরু করেছেন তাঁরা।
শীত নামছে একটু একটু করে। শহর কলকাতাতেও উত্তরের হাওয়ার টের পাওয়া যাচ্ছে। আর উত্তরবঙ্গের ঠান্ডার কথা তো বলাই বাহুল্য। “কিন্তু এই অবস্থায় একটু কম্বলের সংস্থানও নেই চা শ্রমিকদের।” জলপাইগুড়ি প্রতিবিম্ব তাই তাঁদের সামর্থ্য মতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও দেবধৃতা দাসের কথায়, “এটা আমাদের সারা বছরের কাজকর্মের একটা অংশ। এছাড়াও নানা উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা।”
আরও পড়ুন
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি উত্তরবঙ্গে, শিলিগুড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল ডুয়ার্স
প্রথমেই প্রতিবম্বের সদস্যরা ছুটে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন চা বাগানগুলিতে। স্থানীয় আইসিডিএস কর্মীদের সঙ্গে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন সেখানে। সঙ্গে ছিল অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং শিশুদের জন্য কিছু খাবার। দুধ, ছাতু ইত্যাদি। “প্যাকেটের দুধ দেখে সেদিন তাঁরা যেমন অবাক হয়েছিলেন, তাতে সত্যিই অবাক হতে হয়।” বলছিলেন দেবাধৃতা দাস। আর সামনেই আছে শিশুদিবস। তারপর বড়দিন। আবারও সেইসব অবহেলিত শিশুদের কাছে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিবিম্ব।
আরও পড়ুন
প্রবল বন্যার কবলে উত্তরবঙ্গ; লাল সতর্কতা জারি হল ৫টি জেলায়
মাত্র কয়েকজন মানুষের উদ্যোগে তৈরি ‘প্রতিবিম্ব’। সামর্থ্য অতি সামান্যই। তবু সেটুকুই সম্বল করে বারবার এগিয়ে যেতে চান তাঁরা। স্বপ্ন দেখেন, একদিন এই ছবিটা বদলে যাবে। তবে একের পর এক চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়া, আর তার উপর এই করোনা পরিস্থিতি মিলে যেন লড়াই অনেকটাই কঠিন করে তুলেছে। তবু স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন
প্রাণীহত্যায় ইতি, শিকার উৎসবের প্রাক্কালে অস্ত্র জমা দিলেন উত্তরবঙ্গের আদিবাসীরা
Powered by Froala Editor