স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে বিশেষ অধ্যায় থাকুক পাঠ্যপুস্তকে, দাবি ক্ষুদিরামের আত্মীয়ের

মাত্র কিছুদিন আগেই একটি ওয়েব-সিরিজের দৃশ্যে দেখা যায়, দাগী আসামীদের তালিকায় ক্ষুদিরাম বসুর ছবি। প্রযোজকদের তরফ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছিল পুরোটাই অনিচ্ছাকৃত ভুল। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এদেশের স্বাধীনতার জন্য যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের ঠিক কতটুকু মনে রেখেছি আমরা? আর সেই প্রশ্নকেই আবার নতুন করে সামনে নিয়ে এলেন শহীদ ক্ষুদিরামের একজন দূর সম্পর্কের আত্মীয়। সম্প্রতি নিউজ-১৮ চ্যানেলকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রকৃত মর্যাদা দেয়নি আমাদের পাঠ্যপুস্তক। আর তাই সম্পূর্ণ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও চেয়েছেন তিনি।

পরাধীন ভারতে স্বাধীনতার মন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে অসংখ্য মানুষ জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে খুব কম জনকেই সহজে চিনতে পারে আজকের প্রজন্ম। কিন্তু এর জন্য নতুন প্রজন্মকে দায়ী করতে রাজি নন ক্ষুদিরাম বসুর আত্মীয় সিদ্ধার্থ বসু। তাঁর মতে, আমাদের পাঠক্রমের মধ্যেই সমস্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীকে সঠিকভাবে চেনার সুযোগ নেই। আর তাই তাঁর অনুরোধ, সরকার যেন প্রত্যেক স্কুল পড়ুয়ার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামের উপর একটি বিশেষ অধ্যায়ের ব্যবস্থা করেন। 

পাশাপাশি তিনি জানান, ক্ষুদিরাম বসুর একটি ব্যক্তিগত বাক্স হুগলি জেলার কোন্নগরের একটি বাড়িতে ছিল। কিন্তু কিছুদিন থেকে তার কোনো হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। সেই বাক্স কেউ খুঁজে পেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়ের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন কর্ণেল বসু।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন জওয়ান সিদ্ধার্থ বসু নিজেও দেশের জন্য বিপদের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। দেশের মধ্যে যে মাতৃত্বের মূর্তি দেখতেন পরাধীন ভারতের নায়করা, কর্নেল বসু চান সেই মূর্তি যেন প্রত্যেক ভারতীয়ের মনের মধ্যেই উজ্জ্বল হয়ে থাকে। আর এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ও সচেতনতা। একদিকে রাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে ক্ষুদিরাম বসু এবং অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সন্ত্রাসবাদী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিল কিছুদিন আগেই, অন্যদিকে কেন্দ্রের শাসক দলের সমালোচনা করে কিছুদিন আগেই এক স্বাধীনতা সংগ্রামী পেয়েছেন দেশদ্রোহী তকমা। এই পরিস্থিতিতে বারবার প্রশ্ন ওঠে, আদৌ কোন স্বাধীনতা চেয়েছিলাম আমরা? ভারতের বীর সন্তানদের মনে রাখতে না পারলে স্বাধীনতার পর ৭৩ বছর পেরিয়ে এসেও তা কি কোথাও তাৎপর্য হারিয়ে ফেলে? প্রশ্ন রইল পাঠকের দরবারেই...

Powered by Froala Editor