সারিকা কালে। জাতীয় স্তরে খেলা এই তরুণী সারা ভারতের কাছে স্বল্প-পরিচিতাই। সম্প্রতি অর্জুন পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরই সামনে এসেছে তাঁর নাম। কিন্তু তার আগে দেশের মানুষ সত্যিই কি খবর রেখেছিল তাঁর? ভারতকে খো খো খেলায় এশিয়া চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি স্মৃতিচারণায় সেই হতাশাকেই তুলে আনলেন সারিকা।
মহারাষ্ট্রের ওসমানাবাদ জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বাস ২৭ বছর বয়সী এই খো খো খেলোয়াড়ের। ময়দান বেছে নেওয়া মাত্র ১৩ বছর বয়সেই। কিন্তু আর্থিক অনটনই ছিল তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার দরুণ বন্ধ হয়েছিল তাঁর বাবার উপার্জনের পথ। মা সামান্য অর্থাগম করতেন সেলাই করে। পুরো পরিবারকেই ভরসা করে থাকতে হত তাঁর ঠাকুর্দার আয়ের ওপরে। তাতে সারা পরিবারের জন্য অন্নসংস্থান করাই দায় হয়ে পড়েছিল। এমনকি প্রায় এক দশক একবেলা খেয়েই দিক কাটিয়েছেন সারিকা।
২০১৬ সাল নাগাদ আর্থিক অনটন এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, খেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এক ঘরে বন্দি করেছিলেন নিজেকে। তাঁর কোচ চন্দ্রজিৎ যাদব জানান, সেই সময় মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিতে হয়েছিল তাঁকে। সেই যন্ত্রণা, লড়াই পরে উগড়ে গিয়েছিলেন খো খো’র মাঠে। ভারতকে এনে দিলেন ২০১৬ সালে এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট। ছিলেন ভারতীয় দলের অধিনায়িক। সেই প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড়ের তকমাও পেয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে মহারাষ্ট্রেই এক সরকারি অফিসে কর্মরত সারিকা। কিন্তু পুরনো ক্ষতচিহ্ন আজও বার বার ফিরে আসে তাঁর কাছে, জানালেন সারিকা। এ বিষয়ে খেদও রয়েছে তাঁর। তবে সারিকা কালে সম্প্রতি সেই সম্মান পেলেও, তাঁর মতো হাজার হাজার জাতীয় স্তরের খেলোয়াড় আজও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আর্থিক অনটনের সঙ্গে। এই খেলোয়াড়দের প্রতি প্রশাসনের অবহেলার শেষ কোথায়, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে...
আরও পড়ুন
ঘরে টাকা নেই, পেটে নেই খাবার; দারিদ্র্যে ধুঁকছে ‘মাউন্টেন ম্যান’ দশরথ মাঝির পরিবার
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
উত্তমকুমারের ৭২টি সিনেমার ক্যামেরাম্যান ছিলেন তিনি, দারিদ্র্য থেকে চিরমুক্তি বৈদ্যনাথ বসাকের