ঠিক এক সপ্তাহ আগে একসঙ্গে শোনা যায় তিনজন মহিলার আত্মহত্যার ঘটনা। তিনটি ঘটনাই ঘটেছে কেরালাতে। আর এর পরেই কেরালায় গার্হস্থ্য হিংসার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে শুরু হয়ে যায় আলোচনা। তবে এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চলেছে কেরালা সরকার। প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিক্ষাব্যবস্থা, সর্বত্রই লিঙ্গসাম্যের পরিবেশ গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, লিঙ্গসাম্যের কথা মাথায় রেখে পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে রাজ্যের প্রতিটি পাঠ্যপুস্তক। মানুষের শিক্ষা শুরু হয় ছোটো থেকেই। আর এই সময়েই তার মধ্যে যেন কোনো নারীবিদ্বেষী ধারণা প্রবেশ না করে, সেটাই খেয়াল রাখা হবে এক্ষেত্রে। পাশাপাশি স্কুলের পরিবেশের মধ্যেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধুই পাঠ্যপুস্তক নয়, লিঙ্গহিংসা এবং গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ন্ত্রণের জন্য কেরালা প্রশাসনকেও ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি মহিলাদের জন্য বিশেষ আদালত তৈরির কথাও জানিয়েছেন তিনি। মহিলারা যাতে আরও সহজে এবং নিরাপদে নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারেন, সেটাই উদ্দেশ্য। আর আলাদা আদালত হলে এইসমস্ত বিচারের প্রক্রিয়াও অনেক দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি রাজ্যের মহিলা পুলিশ স্টেশনগুলির পরিকাঠামোর বিষয়েও একঝাঁক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ স্টেশনের মধ্যেই রিডিং রুমের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এর ফলে মহিলাদের সঙ্গে প্রশাসনের দূরত্ব কমবে বলেই আশা করা যায়।
নারী নির্যাতন বা গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা অবশ্য শুধু কেরালার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং সারা দেশের মোট নারী নির্যাতনের ঘটনার মাত্র ০.৩ শতাংশ ঘটে কেরালাতে। নতুন পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হলে সেই সংখ্যাটা হয়তো আরও অনেকটাই কমবে। আর এই দৃষ্টান্ত স্থাপনের ভিতর দিয়ে সারা দেশকেই লিঙ্গসাম্যের বার্তা দিচ্ছে কেরালা।
আরও পড়ুন
ভাঙল অচলায়তন, দলিত হয়েও কেরলের দেবাস্বম মন্ত্রী হলেন কে রাধাকৃষ্ণন
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বেসরকারি হাসপাতালে লাগামছাড়া বিল নয়, সীমা বেঁধে দিল কেরালা সরকার