কথায় বলে, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম। তাই ঘরের পরিবেশে লিঙ্গসাম্য আনতে না পারলে দেশজুড়ে লিঙ্গসাম্যও অধরাই থেকে যাবে। তবে এত বছর ধরে নানা আন্দোলন এবং প্রচারের পরেও পারিবারিক দৃশ্যগুলো খুব একটা বদলায়নি। মহিলারা অনেক ক্ষেত্রেই রোজগারের জন্য বাইরে বেরোচ্ছেন ঠিকই, তবে বাড়ির রান্নাবান্না থেকে যাবতীয় কাজও তাঁদেরই করতে হয়। আর না করে যে উপায়ও নেই। কারণ পুরুষদের ছোটো থেকে ঘরের কাজ শেখানোর কথাই ভাবেন না কেউ। এবার এই দৃশ্যটার পরিবর্তন ঘটাতেই অভিনব উদ্যোগ নিল কেরালা সরকার (Kerala Government)। সরকারি উদ্যোগে শুরু হল রান্না (Cooking) এবং ঘরকন্নার বিশেষ কোর্স। বিশেষভাবে পুরুষদের জন্য এই কোর্স। পাশাপাশি সমস্ত লিঙ্গের স্কুল পড়ুয়াদের জন্যও থাকবে বিশেষ কোর্স। ঘরকন্না যে কেবল মহিলাদের কাজ নয়, সেই শিক্ষাটা দেওয়া হবে ছোটো থেকেই।
সম্প্রতি রাজ্যে লিঙ্গসাম্যের পরিবেশ গড়ে তুলতে একগুচ্ছ প্রকল্প নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল কেরালা সরকার। আর সেই উদ্দেশ্যেই এবার নেওয়া হয়েছে ‘স্মার্ট কিচেন প্রোগ্রাম’। রাজ্যের মহিলা ও শিশুকল্যান বিভাগের তরফ থেকেই এই উদ্যোগের দেখভাল করা হবে। তবে সম্পূর্ণ প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে থাকবেন মুখ্য সচিব। পুরুষদের রান্না শেখানোর জন্য প্রশিক্ষিত শেফদের একটি দলও গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি সেইসমস্ত ক্লাসের ভিডিও দেখানো হবে দূরদর্শনেও। এছাড়াও থাকছে শিশুদের জন্য বিশেষ ক্লাস। সেখানে সমস্ত লিঙ্গের শিশুদের রান্নার বিষয়ে আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্নরকম পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে সম্পূর্ণ প্রকল্পটি সম্বন্ধে এখনও কোনো রূপরেখা তৈরি করা হয়নি।
আমাদের দেশে চিরকালই ঘরকন্নাকে মহিলাদের কাজ বলে মনে করা হয়েছে। বর্তমানে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিলেও পাশাপাশি বাড়ির কাজ করে যেতে হয়। আর এই অতিমারী পরিস্থিতিতে ঘরে বসে কাজ করার ব্যবস্থায় আরও বেশি সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। অফিসের কাজ থেকে ঘরকন্না এমনকি সন্তান সামলানো, সবই করতে হচ্ছে একা হাতে। পুরুষদের মধ্যে এই শিক্ষার প্রসার ঘটালে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে বলেই আশাবাদী সরকারি আধিকারিকরা। পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছোটো থেকেই এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে যে, পুরুষের কাজ বা মহিলার কাজ বলে কিছু হয় না। সবাই মিলেই সংসার সামলে রাখতে হয়।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পড়ুয়াদের জন্য ‘সুখী পাঠক্রম’, অনন্য নজির কেরলের আবাসিক স্কুলে