চোরাশিকারীর হাতে খুন পৃথিবীর শেষ মহিলা সাদা জিরাফ

সাদা জিরাফ, পৃথিবীর অন্যতম বিরল একটি প্রাণী। কেনিয়ার গারিসা প্রদেশেই ছিল এই প্রজাতির শেষ আবাসস্থল। ছিল বললে ভুল হবে, এখনও আছে। তবে একটিমাত্র পুরুষ জিরাফ। ফলে পৃথিবীর বুক থেকে এই প্রজাতিটি যে মুছে গেল, সেকথা বলাই যায়। কারণ বংশবিস্তারের আর কোনো সম্ভবনা নেই। সম্প্রতি, এক চোরাশিকারীর হাতে প্রাণ হারাল কেনিয়ার শেষ মহিলা সাদা জিরাফ। এই ঘটনা যে পৃথিবীর অরণ্য বাস্তুতন্ত্রের এক বিরাট ক্ষতি, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন
মারা গেল শেষ প্রাণীটিও, আসামের দ্বীপ থেকে চিরতরে বিলুপ্ত গোল্ডেন লেঙ্গুর

জিরাফ, স্থলভাগের সবচেয়ে লম্বা প্রাণী। বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই তার গলা এত লম্বা। কিন্তু প্রকৃতি নিজেকে যতটা বদলেছে, মানুষের হাতে পড়ে তার বদল ঘটেছে অনেক বেশি। আর এই বদলে যাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না অনেক প্রাণীই। হারিয়ে যেতে বসেছে অনেকেই। তেমনই হারিয়ে যেতে বসেছে জিরাফ। ২০১৬ সালে অন্যতম বিরল প্রজাতির তালিকায় জায়গা পায় জিরাফ। আর সাদা জিরাফ! বিরল জেনেটিক চরিত্রের এই প্রাণীটি কেনিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যেত না। সেখানেও এই প্রাণীটির সংখ্যা কমেছিল মারাত্মকভাবে। শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল মাত্র একটি দম্পতি। তার মধ্যেই খুশির খবর এসেছিল গত আগস্টে। বিলুপ্তপ্রায় এই দম্পতিটি জন্ম দিয়েছে একটি শিশুর। তবে সেই খুশি বেশিদিন টেকেনি।

আরও পড়ুন
আগুনের হাত থেকে বাঁচাতে, অন্য প্রাণীদের নিজের বাসায় আশ্রয় দিল এই প্রাণী

কেনিয়ার ইশাকবিনি হিরোলা অভয়ারণ্য ঘিরে বাস বেশ কিছু আদিম উপজাতির। তাঁদের অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করেন বন্যপ্রাণী শিকার করে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজটা খানিকটা সফল হলেও, পুরোপুরি হয়নি। অনেকেই এখনও বোঝেননা বিরল এইসব প্রজাতির গুরুত্ব। আর তারই ফল ভুগতে হল মহিলা সাদা জিরাফ এবং তার কয়েকমাসের সন্তানকে। সম্প্রতি এক চোরা-শিকারীর হাতে প্রাণ হারাল দুজনেই। আর সেইসঙ্গে ইতি ঘটল একটি বিরল প্রজাতির। এভাবে মানুষের আগ্রাসী চরিত্রের কাছে হার মানতে বাধ্য হচ্ছে বহু প্রজাতি। পৃথিবীর বুকের থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন, এইসব প্রজাতিদের বাঁচাতে না পারলে বাঁচবে না মানুষও। কিন্তু তাতে আমরা কতটুকুই বা সচেতন হচ্ছি? সেই প্রশ্নকেই উস্কে দিয়ে গেল গতকালের ঘটনা।

Latest News See More