কাশ্মীরের শাল বিক্রেতার পাশে দাঁড়াল নেটিজেনরা, সম্মিলনের আশ্চর্য বার্তা কলকাতায়

শীতের কলকাতা এখন উৎসবের মেজাজে। শহর যেমন নানা রঙে সেজে উঠেছে, তেমনই পসরা সাজিয়ে বসেছে শীতবস্ত্র বিক্রেতারা। সেই ভিড়েই মিশে আছেন এক তরুণ, নাম সালিম। সঙ্গে রয়েছে কাশ্মীরি শাল, সালোয়ার কামিজের সম্ভার। হাতের ফোনটার দিকে চোখ চলে যাচ্ছে বারবার। কোনও ক্রেতার কাছ থেকে যদি ফোন আসে। কিংবা, সুদূর কাশ্মীর থেকে পরিবারের খবর যদি পাওয়া যায়…

সালিম শহরের কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের অন্যতম। বলা ভাল, তরুণতমদের একজন। শহরের চেনা-অচেনা রাস্তাঘাটে নিজের পসরা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। সামান্য বিক্রির আশায়। কিন্তু কোনদিনও এই পেশায় আসার ইচ্ছা ছিল না তাঁর। পড়াশোনা করে, আরও বড় জায়গায় যাওয়ার স্বপ্ন ছিল সালিমের।

কাট টু কাশ্মীর। বি.কম. সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র সালিমের কাশ্মীরে পারিবারিক শাল সোয়েটারের দোকান আছে। বাবা অনেকবার বললেও, ব্যবসায় নামেননি তিনি। পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, সময় যে এক রকম থাকে না কারোর!

৩৭০ ধারা বাতিলের পর কাশ্মীরে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাখা হয় দীর্ঘদিন। কারফিউও জারি ছিল। স্কুল, কলেজ, দোকানপাট সমস্ত বন্ধ। অন্যান্য কাশ্মীরবাসীদের মতো চরম দুশ্চিন্তার মুখোমুখি হয় সালিম ও তাঁর পরিবার। পড়াশোনাও বন্ধ, সঙ্গে রোজগারও। আর উপায় না দেখে তরুণ সালিম দোকানের জিনিস ফেরি করারই সিদ্ধান্ত নেন। বেছে নেন কলকাতাকে।

কলকাতায় বেকবাগান অঞ্চলে সামান্য মাথা গোঁজার ঠাই মিলেছে তাঁর। কিন্তু, বিক্রি যে ঠিকমতো হচ্ছে না। তিনি এই লাইনে নতুন, আনকোরা। তার ওপর অত্যন্ত ভদ্র, নম্র এবং মিতভাষী। কোনও বাঁধা খদ্দেরও নেই তাঁর। মাঝখানে ঠিক করেছিলেন ফিরে যাবেন, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও ঠিক হয়নি। এই জিনিসগুলো না বেচলে টাকা আসবে না। বাড়িতেও পাঠাতে পারবে না। তাই, থেকে যান তিনি। চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাঁচার।

সালিম আবার কবে পড়া শুরু করতে পারবেন, জানেন না। কবে সব ঠিক হবে, সেটাও অজানা। কলকাতা কি পারে না তাঁকে কিছু দিতে? সামান্য ভরসা, উষ্ণতা? আর মাত্র কয়েকদিনই কলকাতায় আছেন তিনি। আমরা সালিমের কিছু উপকার করতে পারি না?

জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত কলকাতায় থাকবেন সালিম। এই শীতের মরসুমে, যদি কেউ কিছু কিনতে চান ওঁর থেকে, যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে - +91 97971 93334।