মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বহু শিক্ষার্থী। স্কুলের অনুষ্ঠান উপলক্ষে চলছে বিশেষ অনুষ্ঠান। মঞ্চের ঠিক মাঝে একটা পোস্টার। তাতে একটা স্থাপত্যের ছবি। কী স্থাপত্য, সেটা একঝলক দেখেই সবাই চিনে নিয়েছেন। বিগত বছরে এর প্রসঙ্গে চায়ের আড্ডা গরম হয়েছে। বাবরি মসজিদ। স্কুলের পড়ুয়ারা ছুটে যাচ্ছে বাবরি মসজিদের পোস্টারের দিকে। মাটিতে নামিয়ে আনছে সেটা। অবিকল ১৯৯২-এর ধ্বংসলীলার মঞ্চাভিনয় চলছে।
সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অকুস্থল কর্নাটকের শ্রী রামা বিদ্যাকেন্দ্র হাই স্কুল। সেখানেই স্কুলের বাচ্চারা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার ঘটনাকে মঞ্চস্থ করেছে। মসজিদের পোস্টারটিকে মাটিতে ফেলে উল্লাস করতে দেখা গেছে তাদের। পরে সেই অনুষ্ঠানের ভিডিওই ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
স্বভাবতই এর নিন্দায় সরব হয়েছেন অনেকে। প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষাবিদরা। ভারতের ভবিষ্যত প্রজন্ম তাহলে কি এই হিংসাই শিখবে? ১৯৯২-এর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। এমনকি, অযোধ্যা মামলার রায় বেরনোর পরেও থামেনি বিতর্ক। তার মধ্যেই এমন একটা ছবি কি ভুল বার্তা নিয়ে যাবে সমাজে? বিশেষ করে সেটা যখন সংঘটিত হচ্ছে ছাত্রদের নিয়ে? তাহলে ইতিহাসকে ভেঙে একটি নির্দিষ্ট আদলের মতো করে নেওয়াকেই আপন করে নিচ্ছে শিক্ষামহলের একাংশ?
স্কুলের কর্মকর্তারা অবশ্য এতে কোনও ‘দোষ’ দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁদের মতে, এই ঘটনা একটি ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’। জাতিকে ‘অপমানের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার শিক্ষাই’ নাকি ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, স্কুলের কর্মকর্তা আরএসএস-এর একজন সদস্য। বিদ্বজনেরা প্রশ্ন তুলেছেন, মাদ্রাসার ইসলাম ধর্ম প্রচার নিয়ে তো অনেক সময়ই অনেক কথা বলতে দেখা যায়। তাহলে কর্নাটকের এই স্কুলে যে ঘটনাটা হল, সেটার ক্ষেত্রে কী বিশ্লেষণ করা হবে? ভারতের ভবিষ্যত প্রজন্ম কি একটি নির্দিষ্ট ‘ইতিহাসেই’ দীক্ষিত হবে? প্রশ্ন রয়েছে বিস্তর, কিন্তু উত্তর নেই। উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেই…