জানুয়ারির হাড়কাঁপানো শীত। পাশাপাশি বরফ জমা পিচ্ছিল দুর্গম পথ। তাও সেই পথ পেরিয়েই তাঁরা পৌঁছালেন পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে। এই প্রথম শীতকালে পা পড়ল কে-২ শৃঙ্গের শিখরে। বেজে উঠল নেপালের জাতীয় সঙ্গীত। তৈরি হল এক নতুন ইতিহাস।
বেশ কয়েকদিন আগেই শুরু হয়েছিল অভিযান পর্ব। মিংমা জি'র নেতৃত্বে ১০ জন নেপালি অভিযাত্রীদের একটি দল রওয়ানা দিয়েছিল কে-২ এর উদ্দেশ্যে। আর অন্যদিকে প্রতীক্ষায় ছিল গোটা পৃথিবী। শেষ অবধি আজ সন্ধে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় রেশ পড়ল সেই রহস্যের। প্রথম শীতকালে আরোহন সম্ভব হল গডউইন অস্টিনের।
১৮৫২ সাল। থমাস মনটোগমেরির নেতৃত্বে একটু ব্রিটিশ সার্ভে দল প্রথম চিহ্নিত করেন কারাকোরামে অবস্থিত এই শৃঙ্গকে। কারাকোরামের মাউন্ট হারামুখ থেকে পূর্বে যেতে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ৮০০০ মিটারের থেকেও উচ্চতর দুটি শৃঙ্গ। তাঁরা এই দুই শিখরের নাম দেন কে-১ ও কে-২।
এরও প্রায় ৫০ বছর পর ১৯০২ সালে প্রথম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই চেষ্টা করা হয়েছিল কে-২ অভিযানের। প্রথমবার সফল হয় না অভিযান। তবে চেষ্টা চলতে থাকে শৃঙ্গজয়ের। ৫বারা টানা চেষ্টার পর সফল হন অভিযাত্রীরা।
তারপর থেকে মোট ৩৬৭ জন সফল হয়েছেন কে-২ অভিযানে। তবে শীতের পরিবেশে কে-২ জয় এতদিন অধরা তো থেকেছেই বরং শীতের দুর্গম পরিস্থিতি প্রাণ নিয়েছে বহু অভিযাত্রীর। গড়ে ৪ জন অভিযাত্রীর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন।
তবে পর্বতের ভূমিপুত্র তাঁরা। 'শেরপা'-দের ছাড়া হিমালয় অভিযান যেন এক কথায় অসম্ভবই। সেই শেরপারাই শেষ পর্যন্ত সম্ভব করলেন অসম্ভবকে। শান্ত করলেন পর্বত দেবতাকে। ঐতিহাসিক এই অভিযাত্রী দলে ছিলেন, নির্মল পুর্জা, গেলজে শেরপা, মিংমা ডেভিড শেরপা, মিংমা তেনজি শেরপা, মিংমা জি, সোনা শেরপা, পেম ছিরি শেরপা, দাওয়া টেম্পা শেরপা, কিলি পেম্বা শেরপা, দাওয়া তেনজিং শেরপা। সোনার অক্ষরেই ইতিহাস লেখা থাকবে তাঁদের নামে...
আরও পড়ুন
ট্রেন-দুর্ঘটনায় পা হারিয়েও থামেনি লড়াই, এভারেস্ট-সহ ৭টি শৃঙ্গ জয় করেছেন অরুণিমা
Powered by Froala Editor