ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাচের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। বাকিরাও জোর কদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক এই সময়েই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সিদ্ধান্ত রীতিমতো অবাক করে দিয়েছে সবাইকে। গতকাল সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তি মারফত জানানো হয়, আগামী কোনো সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা তো হবেই না, যা হয়েছে তাও বাতিল করা হবে। পূর্ববর্তী পরীক্ষায় অকৃতকার্য পড়ুয়াদের কোনো পরীক্ষা না নিয়েই পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। করোনা অতিমারী এবং প্রথম তিন দফার লকডাউনের সময়েও পরীক্ষা না নিয়ে পাশ করানোর বিষয়টি মঞ্জুর করেনি ইউজিসি। সেখানে যাদবপুরের মতো দেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ছাত্রছাত্রী ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি গৌরব দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “সিদ্ধান্তের ভুল ঠিকের থেকেও বড়ো কথা, পুরো বিষয়টা অত্যন্ত অস্বচ্ছ। পরীক্ষা না দিলে কীভাবে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন হবে, তার গ্রেডেশন কী হবে, কিছুই স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের জন্য যে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে, তার কিছুই পরিষ্কার নয়।”
ইতিমধ্যে সম্পুর্ণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন পড়ুয়ারা। ছাত্রছাত্রী ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদার জানালেন, "যতক্ষন কর্তৃপক্ষ এই অযাচিত সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর না দিচ্ছে, আমাদের অবস্থান চলবে।" পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, "কোভিড পরিস্থিতি কোনো হঠাৎ এসে পড়া সমস্যা নয়। বিগত এক বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। এখানে কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছেন। কেন এক বছর ধরে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়া হয়নি, তারও কোনো উত্তর নেই।" পড়ুয়াদের আরও দাবি, যেসমস্ত পরীক্ষা ইতিমধ্যে নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তা কোনোভাবেই বাতিল করা যাবে না। সেক্ষেত্রে কীভাবে সেইসব পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে, তারও বিশদ বিবরণ জানাতে হবে।
সময়ের সমস্যার বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা এবং তাতেও অকৃতকার্য হলে রিপিট সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। কিন্তু কেন এতদিন ফেলে রেখে ঠিক প্রবেশিকার আগে আগে প্রক্রিয়া শুরু হল, তার কোনো উত্তর দেননি কেউই। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। এমতাবস্থায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।
Powered by Froala Editor