৩৫ বছর ধরে সৌদি আরবের (Saudi Arabia) সমস্ত সিনেমা হল বন্ধ ছিল। শরিয়তি আইন অনুযায়ী সিনেমা দেখা ছিল অপরাধ। ২০১৮ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। আর এবার দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন শুরু হল জেদ্দা শহরে। বিশ্বের নানা দেশের নতুন সিনেমাগুলি তো রয়েছেই, সঙ্গে ‘ট্রেজারস’ বিভাগে রয়েছে বিগত দিনের একাধিক কিংবদন্তি সিনেমা। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের সিনেমাগুলিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে এই তালিকায়। তবে সত্যজিৎ রায়কে ছাড়া কি এই তালিকা সম্পূর্ণ হতে পারে? তালিকায় রয়েছে ফেলুদা সিরিজের দ্বিতীয় সিনেমা ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-ও (Joy Baba Felunath)। আগামী ১৩ ডিসেম্বর। জেদ্দা শহরে প্রদর্শিত হবে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’।
৬ ডিসেম্বর থেকে জেদ্দা শহরে শুরু হয়েছে ‘লোহিত সাগর চলচ্চিত্র উৎসব’। আর ১৩ ডিসেম্বর সেখানেই প্রদর্শিত হবে কিংবদন্তি এই ফেলুদা সিনেমাটি। ইতিমধ্যে তাই সৌদি আরবের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন সিনেমাটির প্রযোজক আরডি বনসলের নাতনি বর্ষা বনসল। ১৯৭৯ সালে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর শুটিং-এর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর। কাশীর নানা অঞ্চল ঘুরে শুটিং দেখার সুযোগ তাঁর হয়নি। তবে ছোটো থেকেই বাবার কাছে সেইসমস্ত গল্প শুনেছেন। সিনেমার একেবারে প্রথম দৃশ্যে মেঝেতে লেখা নামটিও লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায় নিজেই। ক্যামেরার সামনে উপস্থিত না থেকেও গোটা সিনেমাতেই উপস্থিত ছিলেন সত্যজিৎ। গোটা সিনেমার নির্মাণের ওপর এমন দখল খুব কম পরিচালকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। সত্যজিৎ রায় সেই জায়গা থেকেই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরকাল প্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছেন।
চলতি বছর সেই কিংবদন্তি পরিচালকের জন্ম শতবার্ষিকী। আর এই সময়ে পৃথিবীর নানা দেশে তাঁর সিনেমার জনপ্রিয়তা বেড়েছে অনেকটাই। ইউরোপ-আমেরিকার পাশাপাশি আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশেও প্রদর্শিত হচ্ছে তাঁর সিনেমা। আর এই তালিকায় বাদ পড়ল না মধ্যপ্রাচ্যও। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর পাশাপাশি অবশ্য আরও দুটি ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শিত হবে সেখানে। কেরালার পরিচালক নিতীন লুকোসের মালয়ালম সিনেমা ‘পাকা’ এবং কবির খানের সিনেমা ‘৮৩’ জায়গা পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। তবে এতগুলি নতুন সিনেমার পাশে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ এক অন্য নস্টালজিয়ার জগতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
Powered by Froala Editor