লকডাউনেও কমছে না ভিড়, আস্ত টিউলিপ বাগান ছেঁটে ফেলল জাপান

করোনা ভাইরাসের মহামারী গোটা পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে। প্রভাব ফেলেছে প্রত্যেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। কিন্তু এই ভয়াবহ সময়েও কি সচেতন হতে পেরেছে জনগণ? এই ভয়ঙ্কর মহামারীকে উপেক্ষা করেই তুচ্ছ কারণে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। খোদ কলকাতার বাজারগুলিতে জনস্রোত দেখা যাচ্ছে এখনও। এ না হয় আমাদের দেশের ছবি। কিন্তু অন্য দেশগুলিতে? সেখানেও সম্ভবত একই পরিস্থিতি। তারই ইঙ্গিত দিল জাপানের একটি ঘটনা।

জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে চিবা প্রদেশের ছোট্ট শহর সাকুরা। সেখানেই রয়েছে টিউলিপের বাগান। প্রতিবছর এপ্রিলের এই সময়ে তিরিশ হেক্টর জমি জুড়ে ঝলমল করে টিউলিপের রঙিন দৃশ্য। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য নিয়ে, উৎসবের আয়োজন করেন সেখানকার মানুষ। সাকুরা টিউলিপ ফেস্ট। এই উৎসব উদযাপিত হয় সাকুরা ফুরুসাতো স্কোয়ারে। শুধু জাপান না, বাইরের দেশ থেকেও অনেক পর্যটক ভিড় করেন, এই অপরূপ দৃশ্যের লোভে।

পয়লা এপ্রিল থেকে ২৬শে এপ্রিল পর্যন্ত এই উৎসবের সময়সীমা ঘোষিত হয়েছিল আগেই। তারপরই ছড়িয়ে পড়ে মারণ ভাইরাস। তবে লকডাউন ঘোষণার পর পরই বাতিল করা হয় এই টিউলিপ উৎসব। কিন্তু টিউলিপের টানে, লকডাউনের মধ্যেও সেখানে ভিড় জমতে শুরু করে মানুষের। জনসমাবেশ আটকানো যাচ্ছিল না কোনোভাবেই। বাধ্য হয়েই পুরো টিউলিপ বাগানকেই ছেঁটে ফেলল কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি, দিনে প্রায় ৪০০ লোকের সমাগম হচ্ছিল সাকুরা টিউলিপ স্কোয়ারে। ফলে বাড়ছিল সংক্রমণের সম্ভাবনা। এর ঠিক কয়েকদিন বাদেই, চিবা প্রদেশে জরুরি অবস্থার জারি করে জাপান সরকার।

উৎসব বাতিলের পরেও, সরকারের তরফ থেকে সচেতনতা প্রচার করা হয়েছে বারবার। কিন্তু ভিড় আটকানোর রাস্তা বন্ধ করা যাচ্ছিল না কোনোমতেই। সব শেষে সুন্দরের বিনাশকেই বেছে নিতে হল সরকারকে। কেটে ফেলা হল প্রায় ১০০ রকম বিভিন্নতার ৮ লক্ষ টিউলিপ ফুল।

যাঁদের পরিচর্যায় ঝলমল করে এই বাগান, তাঁদের কাছে ভীষণই কঠিন ছিল এই সিদ্ধান্ত। কর্তৃপক্ষ জানায়, মানুষকে বাড়িতে রাখার জন্যই এই অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁদের। এই সিদ্ধান্তেই, রাতারাতি সাকুরার বর্ণময় ল্যান্ডস্কেপ পাল্টে গেল ধূসর জমিতে।