অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া জগতের একটি অতি পরিচিত নাম জানা পিটম্যান। একবার লনের ঘাসে পা দিলে যে তিনি অপ্রতিরোধ্য। তবে শুধুই দৌড়ের ময়দানে নয়, জীবনের রাস্তাতেও একের পর এক হার্ডল পেরিয়ে যেতে অভ্যস্ত তিনি। আর সেই পরিচিত অ্যাথেলিটকেই সম্পূর্ণ নতুন চেহারায় দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। এখন তাঁর গলায় স্টেথোস্কোপ, পরনে সাদা অ্যাপ্রন। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।
১৯৯৯ সালে ওয়ার্ল্ড ইউথ চ্যাম্পিয়নশিপ কম্পিটিশনে প্রথমবার দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন জানা। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই স্বর্ণপদক জয় করেছিলেন তিনি। তারপর ২০০০ সালে জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ কম্পিটিশনে দুটি স্বর্ণপদক। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ২০০২ এবং ২০০৬ সালের কমনওয়েলথ গেমসেও দুটি করে স্বর্ণপদক জয় করেন তিনি। অলিম্পিক প্রতিযোগিতাতেও সাফল্যের সঙ্গে নিজের কৃতিত্বের প্রমাণ রেখেছেন। এরপর জীবনের আরেকটি ফলকও যে তিনি অনায়াসেই পেরিয়ে যাবেন, তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে?
গত বছরেই জানা পিটম্যানের মনে হয়, কোথায় যেন পুরনো একটি স্বপ্নকে পিছনে ফেলে এসেছেন তিনি। একসময় ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবেন। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসায় এগিয়ে যাবেন অক্লেশে। কিন্তু ঘটনাচক্রে কোথায় সব হারিয়ে গেল! জানা তখন এক সন্তানের মা। এমন সময় তাঁর মনে হল, আবার পুরনো স্বপ্নকে বাস্তব করে তোলার চেষ্টা করা যাক না। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি শিখতে তাঁর বেশি সময় লাগল না। আর এর মধ্যেই এসে পড়ল করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। অন্য সমস্ত চিকিৎসকের মতো এই যুদ্ধে এগিয়ে এলেন তিনিও।
অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ক্রমশ নিয়ন্ত্রণে আসছে সংক্রমণ। আর সরকার লকডাউনের নিয়মও শিথিল করেছে একে একে। এই লড়াইয়ের শরিক হতে পেরে তাই স্বাভাবিকভাবেই খুশি জানা পিটম্যান। সেইসঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসকদের মতোই তিনিও সচেতন করে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে। আগামী দিনে প্রতিটা পদক্ষেপ এগোতে হবে অতি সতর্কতার সঙ্গে। নাহলে আবার ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা ভাইরাস।