জঙ্গলের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, সবুজ বনভূমি চলে যাচ্ছে আগুনের কবলে। গত এক বছরে এরকম দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছে পৃথিবীর নানা প্রান্ত। আর এরকমই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে। সোমবার রাতে জলদাপাড়ার মালঙ্গি বিট অঞ্চলে হঠাৎ দেখা যায় আগুন। ঘটনার আকস্মিকতায় উদ্বিগ্ন বনদপ্তর থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই।
আরও পড়ুন
ফারাক মাত্র এক বছর, জানুয়ারিতে দ্বিগুণ বন ধ্বংস আমাজনে
তোর্সা নদীর কোলে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি। সেখানেই প্রথম আগুন লাগে। প্রতি বছর শীত ও বসন্তের মাঝামাঝি এই সময়টাতে শুকিয়ে আসে ঘাসপাতা। এই শুষ্ক আবহাওয়ার কারণেই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। বিধ্বংসী দাবানলের কবলে চলে গেছে প্রায় ৮০০ হেক্টর বনভূমি।
আরও পড়ুন
আমাজনের পর সুমাত্রা, ভয়াল আগুনে পুড়ছে জঙ্গল
কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যাচ্ছে না। প্রাথমিক অনুমান, স্থানীয় গ্রামবাসীর বিড়ির আগুন থেকেই শুকনো ঘাসে আগুন লাগে। বৈচিত্রময় বাস্তুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। ভারতবর্ষের একমাত্র এই অঞ্চলেই একশৃঙ্গ গণ্ডারের বাস। এছাড়াও আছে বাইসন, নীলগাই, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, ময়ূর, হাতি। হঠাৎ আগুন লাগায় অনেক প্রাণীই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভয় ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
আরও পড়ুন
এখনও চলছে অগ্নিকাণ্ডের জের, আমাজনে মৃত অন্তত ৫০০ জাগুয়ার
গত এক বছরে দাবানলের গ্রাসে নষ্ট হয়েছে পৃথিবীর বহু বনভূমি। আগুন লেগেছে পৃথিবীর ফুসফুস নামে পরিচিত আমাজনের জঙ্গলে। এছাড়াও আফ্রিকার কঙ্গো, অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার মতো গভীর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এবার দাবানলের কবলে উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়া। ঘটনার ঘনঘটায় আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। যদিও বনদপ্তর সূত্রে এখনও কোনো প্রাণীর প্রাণ হারানোর খবর জানা যায়নি। দমকল কর্মীরা প্রাণান্তকর পরিশ্রমে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। তবে বিশেষ পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকা এই বনভূমিতে হঠাৎ এভাবে আগুন লাগল কেন, প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশপ্রেমীরা। জলদাপাড়ার বিরল বাস্তুতন্ত্রের কতটাই বা ক্ষতিগ্রস্ত হল, তার উত্তরের দিকেই তাকিয়ে আছেন পরিবেশপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই।