বারান্দা থেকে ঝোলানো বাস্কেটভর্তি খাবার, অভুক্তদের জন্য উদ্যোগ ইতালিতে

করোনার জন্য চারিদিকে স্তব্ধ সবকিছু। দোকানপাট বন্ধ। এরই মধ্যে আশেপাশের বাড়ির বারান্দা থেকে ঝুলে আছে কিছু বাস্কেট। লম্বা লম্বা দড়ি দিয়ে হঠাৎ এমন বাস্কেট ঝোলানোর মানে কী? একটু কাছে গেলেই বোঝা যাবে ব্যাপারটা। বাস্কেটের ভেতর রাখা আছে খাবার। যে সমস্ত মানুষদের মাথার ওপর কোনো ছাদ নেই, এই বিপদের মধ্যেও যাঁদের রাস্তায় প্রায় অভুক্ত জীবনযাপন করতে হচ্ছে, তাঁদের জন্যই এই আয়োজন করেছে ইতালির বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন
৯০ বছর আগেই খোঁজ মিলেছিল করোনার, প্রথম আক্রমণ ১৯৬৫ সালে

করোনায় সবথেকে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে ইতালি। এখনও অবধি এক লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে। এই প্রতিবেদন যাওয়ার পর হয়ত সংখ্যাটা আরও বেড়ে যাবে। এমন অবস্থায় প্রতিদিন আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ইতালির অধিবাসীদের। তার মধ্যেও নিজেদেকে সাহস দেওয়ার কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। একে অন্যের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। তারই সাম্প্রতিক সংযোজন এই বাস্কেট। ইতালির রাস্তাতেও অসহায়, সম্বলহীন মানুষরা থাকেন। এই দুর্দিনে, যেখানে সমস্ত দোকানবাজার বন্ধ, সেখানে কোনোক্রমে টিকে থাকার লড়াইটা লড়ছেন তাঁরা। চূড়ান্ত অভাব বলে কি তাঁদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই? সেইজন্যই অন্যান্য বাসিন্দারা একটি অভিনব উদ্যোগ নিলেন। নিজেদের বাড়ির বারান্দা থেকে দড়ির সাহায্যে নিচে পৌঁছে দিলেন বাস্কেট। সেখানে রয়েছে কিছু খাবার। সঙ্গে রয়েছে একটি চিঠি, বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর চিঠি। ওই মানুষগুলোও এগুলো নিচ্ছেন; গ্রহণ করছেন বন্ধুত্বও।

আরও পড়ুন
দরিদ্রদের হাতে তুলে দিলেন নগদ অর্থ, মানবতার অনন্য নজির অস্ট্রেলিয়ায়

করোনা মহামারীর এমন দুর্যোগ মনুষ্যত্বের নানা দিক আমাদের সামনে এনেছে। মরণাপন্ন ইতালির এই দৃশ্য সেই আলোরই সন্ধান দেয়। এই একই কাজ আমরা ভারতে, বা নিজের নিজের এলাকায় করতে পারি না? আমাদের চারিদিকে বহু মানুষ এমন আছেন, যাঁদের খাওয়ার জোগাড় এমনি দিনেও অনিশ্চিত। এই লকডাউনের সময় তো থই খুঁজে পাবেন না তাঁরা! তাঁদের দিকে যদি এরকম কোনো উপায় সাহায্য পৌঁছে দিই, সেটাই তো সবথেকে বড়ো কাজ হবে! শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ওই লাইনটি মনে আছে নিশ্চয়ই? ‘মানুষ বড়ো কাঁদছে/ তুমি মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াও’…

Latest News See More