মানুষের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে এক লহমায় বদলে দিয়েছে একটি ভাইরাস। করোনা ভাইরাস। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে আকস্মিক এই ভাইরাসের আবির্ভাব নিয়ে বিস্মিত অনেকেই। বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনের ফলেই এমন ভয়ঙ্কর ভাইরাসের আক্রমণ ঘটছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আবার এই ভাইরাসের আগমনকে ঘিরে নানা জল্পনাও শুরু হয়েছে। এমনকি এই ভাইরাস আসলে প্রকৃতিতে জন্মায়নি, বরং পরীক্ষাগারে জন্ম এই ভাইরাসের; এমনটাই মনে করছেন অনেকে। আর এই মহামারীকে চিনের ষড়যন্ত্র বলে সম্প্রতি মত প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি এই মতের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন অনেক বিজ্ঞানীও।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে মার্চ মাসে এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন ফ্রান্সের ভাইরোলোজিস্ট লুক ও'নীল। এইচআইভি সংক্রান্ত গবেষণার জন্য সারা পৃথিবীর কাছে পরিচিত লুক। তবে করোনা ভাইরাসের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, এমন জটিল ভাইরাস কেবল পরীক্ষাগারেই প্রস্তুত করা সম্ভব। এইচআইভি বা অন্য কোনো ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করতে গিয়ে ভুল করে এমন ভাইরাসের জন্ম হতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি। লুকের এই বক্তব্যে সমর্থন জানিয়েছেন ট্রিনিটি কলেজের অধ্যাপক রবার্ট কিম সহ আরও অনেক বিজ্ঞানী।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে এমন মতকে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বরং করোনা ভাইরাসের জন্ম যে কোনো প্রাণীর শরীরেই, সেই বক্তব্যেই জোর দিতে চান তাঁরা। সাংবাদিক সম্মেলনে এই অবস্থান স্পষ্ট করে দেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্ণধার ট্রেডোস গেব্রিয়েসাস। গুজবে কান না দিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সংকট মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি। ফলে পরীক্ষাগারে করোনা ভাইরাসের জন্ম, এমন মত এখনও স্বীকৃত নয়। আবার যে প্রাণীর শরীরে এই ভাইরাসের জন্ম তা বাদুর নাকি ইঁদুর নাকি সাপ, একথাও স্পষ্ট বলা সম্ভব নয়। ফলে মারাত্মক এই মহামারীকে এখনও এক অস্পষ্ট রহস্যের ধোঁয়াশা ঘিরে রেখেছে।