একদিকে আছে ক্রিকেট জগতের অন্যতম সেরা দলগুলির একটি। আর অন্যদিকের দলটি মাত্র ৩ বছর হল আইসিসির স্থায়ী সদস্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ফলাফল আন্দাজ করতে তেমন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ক্রিকেট তো একটা খেলা, আর খেলার মাঠে সব সমীকরণই ওলটপালট হয়ে যেতে পারে। ঠিক তেমনটাই ঘটল গতকাল, ৪ আগস্ট।
ইংল্যান্ডের আগিয়াস বোল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড। চলতি ওডিআই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ ছিল এটি। আগের দুটি ম্যাচে জিতেছে ইংল্যান্ড। এদিনের ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ডের জন্য ৩২৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখে যায় ইংল্যান্ড। কিন্তু এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে আয়ারল্যান্ড দল হারিয়েছে মাত্র ৩টি উইকেট। অর্থাৎ এই বিপুল রান তাড়া করেও ৭ উইকেটে পর্যুদস্ত করল ইংল্যান্ডকে।
আয়ারল্যান্ড অবশ্য এমন নজির আগেও সৃষ্টি করেছে। সেটা ২০১১ সাল। আয়ারল্যান্ড তখনও আইসিসির স্থায়ী সদস্য নয়। বিশ্বকাপেও সেই দ্বিতীয়বারের জন্য অংশগ্রহণ করছে দল। কিন্তু সেবারেও ইংল্যান্ডের ৩২৭ রান তাড়া করে তিন উইকেটে জয়লাভ করে আয়ারল্যান্ড। আর সেই ম্যাচে কেভিন ও’ব্রায়েনের ৫০ বলে সেঞ্চুরি এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি। গতকালের ম্যাচেও ও’ব্রায়েনের ব্যাটেই জয়ের শেষ রানটা তুলল আয়ারল্যান্ড। তবে সেইসঙ্গে ক্রিকেটের ইতিহাসে আরও দুই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যানের পরিচয় ঘটল। পল স্টারলিং এবং অ্যান্ড্রু বালবির্নি। দুজনের মিলিত সংগ্রহ ছিল ২৫৫।
আয়ারল্যান্ডের গতকালের জয় যেন মনে পড়িয়ে দিচ্ছিল ১০০ বছর আগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের লড়াইয়ের ইতিহাস। প্রবল পরাক্রমী ইংল্যান্ড প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও তখন বিজয়ী শিবিরের সদস্য। কিন্তু স্বাধীনতাকামী আইরিশ মানুষের কাছে শেষ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করতেই হল ইংল্যান্ডকে। আর অবশেষে ১৯২৩ সালে স্বাধীনতার চূড়ান্ত সনদ পায় আয়ারল্যান্ড। সেই পরাধীনতার ইতিহাসই হয়তো বারবার ইংল্যান্ডের সামনে শক্তিশালী করে তোলে আয়ারল্যান্ডকে। ৩০০-রানের বেশি লক্ষমাত্রা নিয়েও লড়াই চালিয়ে যান ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচের শেষে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পল স্টারলিং তাই হাসিমুখে বলতে পারেন, এরকম লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তো আমরা আগেও জিতেছি। আমরা জানতাম এবারেও জয় আমাদেরই হবে।
আরও পড়ুন
১৯১১ সালে মোহনবাগানের শিল্ড জয়ের কাহিনি ঠাঁই পাচ্ছে পাঠ্যপুস্তকেও
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
লিভারপুলের জয় দেখার জন্য মৃত্যুকেও ঠেকিয়ে রেখেছিলেন ডেভ ইভান্স